বিস্তারিত জানুন “সাক্ষ্য আইন/The Evidence Act-১৮৭২”

সাক্ষ্য আইন/The Evidence Act-১৮৭২

শিরোনামঃ

  • ১৮৭২ সালের ১নং আইন হলো সাক্ষ্য আইন বা The Evidence Act.
  • সাক্ষ্য আইনের উৎস বৃটিশ আইন থেকে বা এটিকে বৃটিশ জুরি সিষ্টেমের ফসল বলা হয়।
  • ১৮৭২ সালের ১৫ই মার্চ সাক্ষ্য আইন পাশ হয় বা প্রণীত হয়। যা ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর।
  • সাক্ষ্য আইনের পূর্বনাম ছিল ভারতীয় সাক্ষ্য আইন। ভারতীয় শব্দটি উঠে গিয়ে এর নাম হয়েছে সাক্ষ্য আইন।
  • স্যার ফিটজ জেমস ষ্টিফেনকে সাক্ষ্য আইনের লেখক বলা হয়। জনক বা প্রবক্তা নয়।
  • সাক্ষ্য আইনে ধারা ১৬৭টি। অধ্যায় ১১টি, ৩ খন্ডে বিভক্ত।
  • সাক্ষ্য আইনের ৩টি ধারা বাতিল। যথাঃ ধারা-২, ৮১, ১১৩।
  • সাক্ষ্য আইনকে ১টি পূনার্ঙ্গ আইন বা সম্পূর্ণ আইন বলে।

সাক্ষ্য আইনের প্রথম অধ্যায়ের নাম প্রাথমিক বিষয়।

৩টি খন্ডে বিভক্তঃ

১ম খন্ডঃ ১ম থেকে ২য় অধ্যায় ধারা-১-৫৫ কি প্রমান করতে হবে

২য় খন্ডঃ ২য় থেকে ৬ষ্ঠ অধ্যায় ধারা-৫৬-১০০ কিভাবে প্রমান করতে হবে

৩য় খন্ডঃ ৭ম থেকে ১১তম অধ্যায় ধারা-১০১-১৬৭ কে/কি পদ্ধতিতে প্রমান করতে হবে

সাক্ষ্য আইনের বৈশিষ্ট্য ২টিঃ

(১) সাক্ষ্য আইন দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

(২) সাক্ষ্য আইনকে Lexflori বা ফোরামের আইন বা আদালতের আইন বলে।

সাক্ষ্য আইনের সংজ্ঞা কোথাও দেওয়া হয়নি। সাক্ষ্য হলো এমন বিষয় যা দ্বারা কোন কিছু প্রমান বা অপ্রমান করা যায়। (ধারা-৩)

একটি ঘটনাকে তখনই প্রমানিত বলা যায় যখন আদালত বিবেচনামূলক ভাবে উক্ত ঘটনাটিকে সত্য বলে ধরে নেয়। অথবা এর অস্তিত্ব আছে বলে মনে করে। আদালত উক্ত ঘটনাটিকে অস্তিত্বহীন মনে করলে তা মিথ্যা প্রমানিত হবে।

অপ্রমানিত হলো এমন একটি ঘটনা যা প্রমানিত নয় অথবা মিথ্যা বলে প্রমানিত নয়।

সাক্ষ্য আইন ৫টি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়ঃ

(১) সেনাবাহিনী আইন ১৯৫২।

(২) বিমানবাহিনী আইন ১৯৫৩।

(৩) নৌ-বাহিনী আইন ১৯৬১।

(৪) সালিশ কার্যকর আইন (যেহেতু সালিশ আইন বিশেষ বা মৌলিক আইন। এক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য নয়। এবং সালিশদার বিচারকের অন্তর্ভূক্ত না হওয়াও এর অন্যতম কারণ)।

(৫) হলফনামার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য নয়। (যেহেতু হলফনামায় জেরা করার সুযোগ থাকে না। নোটারী করে হলফনামা প্রদান করতে হয়। জনসংশ্লিষ্ট বিষয় যিনি নোট করেন তাকে নোটারী পাবলিক বলে। হলফনামা হলো আইনগত ভাবে শপথ পাঠ করাতে সক্ষম ব্যক্তির কাছে লিখিতভাবে স্বে”ছায় ঘোষনা প্রদান)।

যে সকল ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্যঃ

বাংলাদেশের সকল বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য আইন প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোর্ট মাশাল আইনে ও বা কোর্ট মার্শাল আদালতেও এ আইন প্রযোজ্য।

সংজ্ঞাঃ সাক্ষ্য দ্বারা কোন ঘটনাকে প্রকাশ্য, বিধিত, সহজবোধ্য, অস্তিত্ববান বা অস্তিত্বহীন প্রমান করা যায়। এটি যে আইন দ্বারা পরিচালনা করা হয তাকে সাক্ষ্য আইন বলে।

ধারা-৩ঃ নিম্নলিখিত সংজ্ঞাগুলোর নিম্নলিখিত অর্থ হবে।

আদালতঃ আদালত বলতে সকল জজ বা ম্যাজিষ্ট্রেটকে বুঝায়। সহজ করে বলা যায় আইনগত ভাবে সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে কোর্ট বা আদালত বলে। মনে রাখা প্রয়োজন মুন্সেফ জজও বিচারকের অন্তর্ভূক্ত হবে কিন্তু সালিশদার নয়।

বিচার্য্য বিষয়ঃ যা কোন তর্কিত বিষয়কে স্বীকার বা অস্বীকার করে তাকে বিচার্য বিষয় বলে। বিবাদী বাদীর দাবী স্বীকার করে নিলে বিচার্য বিষয় গঠন করা যাবে না।

দলিলঃ একটি লেখা মানেই একটি দলিল। তা যে কোন পদার্থের উপরে মুদ্রিত, অংকিত, চিত্রিত, সাংকেতিক বা খোদাইকৃত হতে পারে।

ঘটনাঃ পঞ্চইন্দ্রিয় দ্বারা প্রত্যেক্ষভাবে বোধগম্য বিষয়কে ঘটনা বলে। অর্থাৎ যিনি বা দেখেছেন সেটি তার জন্য ঘটনা।

ধারা-৫ঃ কোন ঘটনার সাথে অন্য একটি ঘটনা মিলে গেলে একথা প্রাসঙ্গিক হবে উক্ত ঘটনাগুলো একই ব্যক্তি ঘটা”েছ।

সাক্ষ্যের মাধ্যম ৩টিঃ যথাঃ

(১) সাক্ষী (বাদী, বিবাদী, ফরিয়াদী এবং অন্যান্য সাক্ষী)

(২) দলিল

(৩) বস্তু।

সাক্ষ্য ২ প্রকারঃ

(১) মৌখিক

(২) লিখিত বা দালিলিক সাক্ষ্য

ধারা-১৪ঃ মনের বা দেহের অবস্থা, দৈহিক উপলদ্ধি, দৈহিক উপলদ্ধির অস্তিত্ব প্রদর্শন সাক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক হবে।

ধারা-৮ঃ মোটিভের অপর নাম ই”ছা। আর প্রস্তুতি হলো উক্ত ঘটনা সংঘটনের কৌশল তৈরি করা। প্রকাশের অপর নাম আচরন।

ধারা-৮ এ মোটিভ ও আচরন সাক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক হবে।

ধারা-২২ঃ দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়।  মৌখিক সাক্ষ্য/Oral Evidence

বিবৃতি আকারে আদালতে উপ¯ি’ত হয়ে যে সাক্ষ্য দেওয়া হয় তাকে মৌখিক সাক্ষ্য বা ঙৎধষ ঊারফবহপব বলে।

আর দলিলে যা আছে তা আদালতে উপ¯ি’ত করলে তাকে লিখিত সাক্ষ্য বলে।

ধারা-৫৯ঃ দলিলের বিষয়বস্তু ব্যতিত সকল ঘটনাই মৌখিক সাক্ষ্য দ্বারা প্রমান করা যাবে।

অর্থাৎ ২২ ধারা মতে দলিলের বিষয়বস্তু সম্পর্কে মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়।

ধারা-৬০ঃ মৌখিক সাক্ষ্য অবশ্যই প্রত্যেক্ষ হতে হবে। অর্থাৎ মৌখিক সাক্ষ্য যিনি দেবেন তাকে স্বয়ং বিষয়টি দেখতে হবে। তবে কোন লেখকের গ্রš’ বা বিশেষভাবে মতামতের ক্ষেত্রে তাদেরকে হাজির করা আদালতের ই”ছাধীন/ স্বে”ছাধীন/স্ববিবেচনামূলক ক্ষমতা। ইহা ছাড়া সকল মৌখিক সাক্ষ্য সাক্ষী আদালতে উপ¯ি’ত হয়ে দিতে বাধ্য বা আইনগত অধিকার বা আইনগত ক্ষমতা।

ধারা-৩২ঃ শ্র“তি সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য নয়। (শোনা কথায় কান দিতে নয়) অর্থাৎ শ্র“তিসাক্ষ্য বা জনশ্র“ত সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য নয় বা প্রাসঙ্গিক নয়।

তবে ৪ ব্যাক্তির শ্র“তি সাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্যঃ

(১) মৃত ব্যক্তি অর্থাৎ মৃত্যুকালীন ঘোষনা, বিবাহ ও পিতৃত্বের দায় সম্পর্কে শ্র“তিসাক্ষ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য।

(২) সাক্ষ্য দিতে অসমর্থ ব্যক্তি।

(৩) নির“দ্দেশ ব্যক্তি।

(৪) যথেষ্ট সময়ের মধ্যে যাকে হাজির করা যায় না।

ধারা-৩২(১)ঃ মৃত্যুকালীন ঘোষণা।

মৃত্যুকালীন ঘোষনা শুধুমাত্র মৃত্যুরকারণ, বিবাহ ও পিতৃত্বের দায় সম্পর্কে দেওয়া যায়। সম্পত্তি দানের ক্ষেত্রে নয়। মৃত্যুকালীন ঘোষনা দেওয়ার ঘোষণাকারীকে অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। ঘোষণাকারী মৃত্যুবরণ না করলে ঘোষণাটি সাক্ষ্যগত মর্যাদা হারাবে। উক্ত সাক্ষ্য বিচার্য্য বিষয়ে সমর্থনমূলক সাক্ষ্য হলে একে ডাইং ডিকোজিশন বলে। যা ১৫৭ ধারার ক্ষমতা বলে ব্যবহৃত হয়।

মৃত্যুকালীন ঘোষণা সাক্ষ্যের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড দেওয়া যায় না। অর্থাৎ মৃত্যুকালীন ঘোষনা সাক্ষ্যে নিলে সর্বো”চ শাস্তি যাবতজীবন।

তবে মৃত্যুকালীন ঘোষনা লিখিত বা মৌখিক উভয়ভাবেই দেওয়া যায় এবং সকলের কাছে দেওয়া যায়।

লিখিত/দালিলিক সাক্ষ্যঃ একটি লেখা মানে একটি দলিল। সেই দলিলটি যখন আদালতের নিকট উপ¯’াপন করা হয়। তখন তাকে লিখিত/দালিলিক সাক্ষ্য বলে।

লিখিত/দালিলিক সাক্ষ্য ২ প্রকারঃ

(১) প্রাথমিক বা মূখ্য সাক্ষ্য (Primary Evidence)

(২) গৌণ বা মাধ্যমিক সাক্ষ্য Secondary Evidence)

মাঝে মাঝে মৌখিক সাক্ষ্য ও দালিলিক সাক্ষ্য হওয়ার সুযোগ থাকে। কোন দলিল খুঁজে পাওয়া না গেলে ঐ বিষয় নিয়ে মৌখিক সাক্ষ্য দেওয়া হলে তা মাধ্যমিক সাক্ষ্য বলে বিবেচিত হবে।

ধারা-৬২ঃ মূল দলিলটি যখন আদালতে উপ¯’াপন করা হয় তখন তাকে প্রাথমিক সাক্ষ্য বলে।

প্রাথমিক সাক্ষ্যের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে কত ধারায়? উত্তরঃ ধারা-৬২। ধারা-৬৩ঃ এই ধারার মাধ্যমে ৫টি উপ-ধারায় মাধ্যমিক সাক্ষ্যের বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

মূল দলিল থেকে যে কোন উপায়ে প্রস্তুতকৃত দলিলকে মাধ্যমিক দলিল বলে। যখন মাধ্যমিক সাক্ষ্য ব্যবহার করতে হয়ঃ

(১) সরকারী দলিলের ক্ষেত্রে।

ধারা-৭৬ঃ ফি প্রদানপূর্বক সরকারের নিকট থেকে যে কোন দলিল পাওয়া গেলে তা মাধ্যমিক দলিল বলে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ সরকারী দলিলের অপর নাম মাধ্যমিক দলিল।

সরকারকে ৪টি শব্দে চেনা যায়ঃ-

(ক) সার্বভৌমত্ব (যে কোন দেশ)

(খ) সায়ত্বশাসিত,

(গ) স্বাধীনতা,

(ঘ) বিচার বিভাগ।

(২) যে ক্ষেত্রে মূল দলিলটি খুজে পাওয়া যায় না।

(৩) মূল দলিলটি অন্য কারো হেফাজতে থাকলে।

দলিলকে আরোও ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

(১) সরকারী বা পাবলিক দলিল। {ধারা-৭৪}

(২) ব্যক্তিগত বা বেসরকারী বা প্রাইভেট দলিল। {ধারা-৭৫} 

ধারা-৭৪ঃ সরকারের সাথে সম্পর্কিত সব ধরনের দলিলকে সরকারী দলিল বা পাবলিক দলিল বলে।

ধারা-৭৫ঃ সরকারী দলিল ব্যতিত যা কিছু আছে তাই ব্যক্তিগত বা বেসরকারী দলিল।

কোন কোন ব্যক্তিগত দলিল ও সরকারী দলিলে রূপান্তরিত হতে পারে।  কোন ব্যক্তিগত দলিল যদি সরকারী ভাবে সংরক্ষিত হয়। সেক্ষেত্রে তা সরকারী দলিল বলে বিবেচিত হবে। যেমনঃ জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধন, ভোটাার আইডি, বায়োমেট্রিক, বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন ইত্যাদি।

কোন শব্দের সাথে ব্যুরো বা নিবন্ধন বা রেজিষ্ট্রেশন থাকলে তা সরকারী দলিল বলে গণ্য হবে। যেমনঃ আদমশুমারী ব্যুরো আদম শুমারী কমিশন ইত্যাদি।  সংবাদ পত্রের কোন স্বাক্ষ্যগত মুল্য নেই যতক্ষন না পর্যন্ত উক্ত সংবাদের রির্পোটের আদালতে এসে মৌখিক সাক্ষ্য না দেয়।  সংবাদপত্র একটি প্রাথমিক সাক্ষ্য।

ধারা-১৩৪ঃ সাক্ষীর কোন নির্ধারিত সংখ্যা নাই। অর্থাৎ সাক্ষী কোন সংখ্যার উপরে নির্ভর করে না।

ধারা-১১৮ঃ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের যুক্তিসঙ্গত উত্তর দিতে যিনি পারেন তিনি সাক্ষী হতে পারেন। অর্থাৎ পাগল, উম্মাদ, নেশাগ্র¯’, শিশু সাক্ষী হতে পারবে।

যে কোন বয়সের ব্যক্তি সাক্ষী হতে পারবেন। তবে ১২ বছরের কম বয়সী হলে শপথ বাক্য পাঠ করানোর দরকার নাই।

ধারা-৬৮ঃ আইনে যদি কোন দলিল প্রত্যয়নের বিধান থাকে তবে তা অবশ্যই প্রত্যায়িত হতে হবে।

সাক্ষীর সাক্ষাতে দলিল স্বাক্ষর করা হলে তাকে প্রত্যয়নকারী সাক্ষী বলে। যে দলিল দুই বা ততোধিক সাক্ষীর সাক্ষাতে প্রনয়ন করা হয় তাকে প্রত্যায়িত দলিল বলে। প্রত্যয়ন বলতে প্রকাশ্য স্বাক্ষরকে বুঝায়।

নিু লিখিত দলিলগুলো প্রত্যায়িত হতে হবেঃ

(১) ¯’াবর সম্পত্তির দান বা ঞচ অপঃ.

(২) ১০০ টাকার উর্ধে বন্ধকী দলিল।

(৩) মুসলিম ব্যতিত অন্যান্য যে কোন ধর্মাবলম্বীদের উইল।

যে সকল দলিল প্রত্যয়ন করার প্রয়োজন নাইঃ

(১) ৯০ ধারা অনুসারে ৩০ বছরের পুরনো দলিল সঠিক হেফাজতে/সংরক্ষনে থাকলে।

(২) প্রতিপক্ষ দলিলের সম্পাদন স্বীকার করে নিলে।

(৩) ৬৮ ধারা অনুযায়ী রেজিষ্ট্রির পর স্পষ্টভাবে দলিল অস্বীকৃত না হলে।

(৪) ৬৬ ধারা অনুযায়ী নোটিশ দেওয়ার পর দলিল দাখিল করা না হলে।

(৫) উইলের প্রবেট হলে সে উইলের বিষয়ে।

ধারা-১২৬ঃ মক্কেলের অনুমতি ব্যতিত এডভোকেট তার তথ্য প্রকাশ করতে পারবে না।

১২৭ ধারা : অনুযায়ী এডভোকেট বলতে তার দোভাষী ভৃত বা চাকর এর অন্তভূক্ত হইবে।

জানার প্রয়োজনকে প্রাসঙ্গিক বিষয় বলে। অর্থাৎ বিচার্য বিষয়ের সাথে যা কিছু সম্পর্ক যুক্ত আছে তা প্রাসঙ্গিক বিষয় বিচার্য বিষয়ের সাথে সম্পর্ক যুক্ত না হলে তা অপ্রাসঙ্গিক।

ধারা-১৪ঃ মনের বা দেহের অব¯’া, দৈহিক উপলদ্ধির অস্তিত্ব প্রদর্শন মামলায় প্রাসঙ্গিক হবে। দেওয়ানী মামলায় চরিত্র প্রাসঙ্গিক নয়।  তবে ক্ষতি পূরণের মামলায় ক্ষতিপূরণের পরিমান নির্ধারণের জন্য চরিত্র প্রাসঙ্গিক হবে।Ñধারা-১২।

ধারা-৫২ঃ দেওয়ানী মামলায় তিনি সৎচরিত্রের অধিকারী এ কথা অপ্রাসঙ্গিক।

বিচার্য বিষয় খারাপ চরিত্র নিয়ে গঠিত হলে খারাপ চরিত্র মামলায় প্রাসঙ্গিক হবে।

ধারা-১৪৬ঃ জেরায় যে সকল বিষয় প্রাসঙ্গিক হবে না যে সকল প্রশ্ন করা যাবেঃ (১) সত্যবাদীতা পরীক্ষার জন্য। (২) পরিচয় ও মর্যাদা জানার জন্য। (৩) বিশ্বাস সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরীর জন্য।

মনে রাখা প্রয়োজন ৫৬ ধারা অনুসারে অভিযুক্ত ব্যক্তি ভালো চরিত্রের অধিকারী একথা মামলায় প্রাসঙ্গিক।

ধারা-১৫৫ঃ সাক্ষীর নির্ভরযোগ্যতা, বিশ্বাসযোগ্যতা বা সত্যবাদিতা সম্পর্কে সাক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক বা আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে। অনুমান

ধারা-৪ঃ কোন কিছু কে সত্য বলে ধরে নেওয়াকে অনুমান বলে। কোন কিছু সত্য বা মিথ্যা বলে ধরে নেওয়া আদালতের ই”ছাধীন, স্বে”ছাধীন বা স্ববিবেচনামূলক ক্ষমতা। চূড়ান্ত অনুমানের ব্যাপারে এটি আইনগত ক্ষমতা বা আইনগত অধিকার।

উক্ত ধারনা বিশ্লেষণ পূর্বক অনুমানকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

(১) ই”ছাধীন অনুমান বা ঘটনার অনুমান বা ধরে নেওয়ার অনুমান। (ই”ছাধীন ক্ষমতা) {ধারা-৯০, ১১৪}

(২) তথ্যগত অনুমান বা খন্ডনযোগ্য অনুমান (ই”ছাধীন) {ধারা-৭৯-৮৯, ১০৫}

(৩) চূড়ান্ত অনুমান বা যা প্রমানের প্রয়োজন নেই। (আইনগত ক্ষমতা) {ধারা-৪১, ১১২} (১) ই”ছাধীন অনুমান বা ধরে নেওয়ার অনুমানঃ

যেমনঃ {ধারা-৯০, ১১৪} তে ঘটনার অনুমান বা ধরে নেওয়ার অনুমান বা ই”ছাধীন অনুমানের কথা বলা হয়েছে।

ধারা-৯০ঃ ৩০ বছরের পুরনো দলিল সঠিক হেফাজতে থাকলে আদালত তা সত্য বলে ধরে নিতে পারেন।

ধারা-১১৪ঃ স্বাভাবিক ঘটনাবলীর সাধারণ গতিধারা, মানবিক আচরন, সরকারী ও বেসরকারী কার্য্যাবলীর স্বাভাবিক নিয়মাবলী আদালত ধরে নিতে পারেন। যেমনঃ গুর“ত্বপূর্ণ সাক্ষ্য/সমর্থন মূলক সাক্ষ্য পাওয়া গেলে অপরাধের সহযোগী বিশ্বাসের অযোগ্য।

যখন পর্যাপ্ত পরিমানে সাক্ষ্য পাওয়া না যায় তখনই কেবল রাজসাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

তথ্যগত অনুমান বা খন্ডনযোগ্য অনুমান (ই”ছাধীন) {ধারা-৭৯-৮৯, ১০৫} ধারা-৮৬ঃ কোন বিদেশী রাষ্ট্রের বিচারিক রেকর্ড সম্পর্কে আদালত ধরে নিতে পারেন।

ধারা-৮৭ঃ বই, ম্যাপ, চার্ট সম্পর্কে আদালত ধরে নিতে পারেন।

ধারা-৮৮ঃ টেলিগ্রাম, সংবাদবার্তা সম্পর্কে আদালত ধরে নিতে পারেন।

ধারা-৮৯ঃ দলিল চাওয়ার পরে তা দাখিল করা না হলে আদালত তা সত্য বলে ধরে নিতে পারেন।

চূড়ান্ত অনুমান বা যা প্রমানের প্রয়োজন নেই। (আইনগত ক্ষমতা) {ধারা-৪১, ১১২}

ধারা-৪১ঃ কোন উপযুক্ত আদালত থেকে বিবাহ, প্রবেট, অগ্রক্রয়, দেওলিয়াত্ব, নৌ-বিভাগ সংক্রান্ত মামলার রায় বা ডিক্রি দেওয়া হলে পৃথিবীর সকল আদালত তা মানতে বাধ্য।

ধারা-১১২ঃ দু’ধরনের সন্তান জন্মদানের কথা বলা হয়েছে এবং এ দু’ধরনের সন্তান জন্মদানই চূড়ান্ত অনুমান বলে গ্রহণযোগ্য।

(১) বিবাহ বলবৎ থাকাব¯’ায় কোন সন্তান জন্মগ্রহণ বিবাহের চূড়ান্ত প্রমান।

(২) বৈধ বিবাহ বি”েছদের ২৮০ দিনের মধ্যে মাতার পুনঃরায় বিবাহ না হওয়া অব¯’ায় কোন সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে তা বৈধ সন্তান।

ধারা-৫৬ঃ আদালতের দৃষ্টি গোচরে যা থাকবে তা প্রমান করার দরকার নাই। তাকে জুডিশিয়াল নোটিশ বলে।

ধারা-৫৭ঃ ১১টি বিষয়ে প্রমান রার দরকার নাই। জুডিসিয়াল নোটিশ হলো সেই নোটিশ যে সকল বিষয়ে আদালত অবগত আছেন।

সরকারের সাথে সম্পর্কিত কোন বিষয় প্রমানের দরকার নাই।

ভৌগলিক বিষয়, সময়ের হিসাব, স্বীকৃত মানচিত্র, পতাকা, আইনসভা, আদালতের সংকেত, কোন প্রকাশিত ইতিহাস, শিল্পকলা, সাহিত্য, ডি.এল.আর, ছুটি উৎসব, উপবাস সরকার প্রদত্ত। স্বীকার এবং স্বীকৃতি  জানার প্রয়োজনকে প্রাসঙ্গিক বলে। আর প্রয়োজনীয় জানাটুকু প্রকাশ করাকে স্বীকার বা এডমিশন বা স্বীকৃতি বলে। যা ১৭ ধারায় বলা হয়েছে।  স্বীকার বা স্বীকৃতি দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

স্বীকারোক্তি বা কনফেশন এর সংজ্ঞা সাক্ষ্য আইনের কোথাও দেওয়া হয় নাই্। তবে এর উপাদন ২০-৩০ ধারার মধ্যে পাওয়া যায়।

নিজের দোষ স্বীকার করে কিছু বলাকে স্বীকারোক্তি বা কনফেশন বলে।

স্বীকারোক্তি/ কনফেশন শুধুমাত্র ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

সহজ করে বলা যায় ম্যাজিষ্ট্রেট ব্যতিত অন্য কারো কাছে স্বীকারোক্তি বা কনফেশন গ্রহণ যোগ্য নয়। কিন্ত স্বীকার/ এডমিশন সবার কাছেই করা যায়।

ধারা-৩১ঃ এডমিশন বা কনফেশন গ্রহণ করা আদালতের ই”ছাধীন, স্বে”ছাধীন বা স্ববিবেচনামূলক ক্ষমতা।

১৬৪ ধারায় ম্যাজিষ্ট্রেট এর নিকট স্বীকারোক্তি/ দোষ স্বীকার দেওয়ার পর বিচারিক আদালতে তা অস্বীকার করলে তাকে প্রত্যাহারিত বা Retracted স্বীকারোক্তি বলে।

স্বীকারোক্তিকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

(১) জুডিসিয়াল স্বীকারোক্তিঃ ম্যাজিস্ট্রেট এর নিটক ১৬৪ ধারায় যে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয় তাই জুডিসিয়াল স্বীকারোক্তি।

(২) নন-জুডিসিয়াল স্বীকারোক্তিঃ ম্যাজিস্ট্রেট ব্যতিত অন্য যে কারো কাছে যে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয় তাকে নন-জুডিসিয়াল স্বীকারোক্তি বলে।

ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারায পুলিশের কাছে যে স্বীকারোক্তি দেওয়া হয় তাকে ননজুডিসিয়াল স্বীকারোক্তি/ঈড়হভবংংরড়হ বলে।

ধারা-২৪ঃ প্রলোভন, ভীতি প্রদর্শন, প্রতিশ্র“তি দিয়ে এগুলোর যে কোন একটির মাধ্যমে যদি স্বীকারোক্তি নেওয়া হয় তবে তা আদালতে গ্রহণ যোগ্য নয়।

ধারা-২৫ঃ পুলিশের নিকট স্বীকারোক্তি আদালতে গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশ বলতে চৌকিদার, দফদার থেকে আই.জি.পি পর্যন্ত অন্তর্ভূক্ত।

ম্যাজিষ্ট্রেট ব্যতিত অন্য কারো কাছে স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। ম্যাজিস্ট্রেট উপ¯ি’ত এবং পুলিশ উপ¯ি’ত থাকলেও সেই স্বীকারোক্তি গ্রহণযোগ্য নয়।

ধারা-২৭ঃ আলামত হিসেবে যতটুকু উদ্ধার করা যাবে পুলিশ সাক্ষ্য হিসেবে ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করতে পারবে।

ধারা-২৯ঃ নেশাগ্র¯’ থাকাব¯’ায় স্বীকারোক্তি বা ঈড়হভবংংরড়হ আদালতে গ্রহণযোগ্য।

মনে রাখা প্রয়োজন ঈড়হভবংংরড়হ সর্বদাই বিবৃতিকারীর বির“দ্ধে যায় এবং আদালত বিশ্বাস করেন যে, কেউ নিজেকে জড়িয়ে মিথ্যা দোষ স্বীকার করে না।

স্বীকার সর্বদাই বিবৃতিকারীর অনুকুলে যায়।

ধারা ১৭ ও ১১৫ এক সাথে পড়তে হবে।  ধারা-১৭ঃ জানাটুকু প্রকাশ করার নাম স্বীকার।

ধারা-১১৫ঃ এস্টোপেল বা স্ব-কার্যজনিত বাধা বা প্রতিবন্ধকনীতি।

যা স্বীকার করা হলো তা কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। ইহাই হলো এস্টোপেল বা স্ব-কার্যজনিত বাধা। ইহা শুধুমাত্র দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

অর্থাৎ আইনের ব্যাখ্যায় বা আইনের প্রশ্নে বা ঈড়হভবংংরড়হ/স্বীকারোক্তির ক্ষেত্রে এস্টোপেল নীতি প্রযোজ্য নয়।

ধারা-১১৬ঃ ¯’াবর সম্পত্তি দখলকারের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করে তাকে এ কথা বলতে দেওয়া যাবে না যে দখলের অনুমতি দানের সময় সম্পত্তিতে দাতার কোন অধিকার ছিল না।

ধারা-১১৭ঃ বেইল অব এক্সচেঞ্জ বা জামানত দানকালে জামানত গ্রহীতা এ কথা বলতে পারবে না যে জামানত দেওয়ার সময় অনুমতি পত্র সম্পাদন করার ক্ষমতা দাতার ছিল না।

মনে রাখা প্রয়োজন কোন ঘটনার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে এস্টোপেল নীতি বাধা সৃষ্টি করে মাত্র এবং আইন বিষয়ে প্রতিপক্ষের নীতি অকার্যকর।

ধারা-১২০ঃ স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পক্ষে বা বির“দ্ধে স্বাক্ষী দিতে পারবেন।

ধারা-১২২ঃ স্বামী-স্ত্রী তাদের বিবাহ বলবৎ থাকাব¯’ায় তাদের মধ্যে যে সকল তথ্য আদান প্রদান হয় তা বলতে বাধ্য নয়।

প্রমানের দায় (ধারা-১০১-১০৪ দায় ¯’ান্তরিত হয় না)

ধারা-১০১ঃ যিনি যা প্রমান করতে চান তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

দেওয়ানী মামলায় বাদীর দায় তৈরী হয় আরজি দিয়ে আর বিবাদীর দায় তৈরী হয় লিখিত জবাব দিয়ে। অর্থাৎ দেওয়ানী মামলার দায় নির্ভর করে প্লিডিংস এর উপরে।

ফৌজদারী মামলার দায় সর্বদাই ফরিয়াদী বা দরখাস্তকারীর প্রমানের দায়কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

(১) আইনগত দায়,

(২) তথ্যগত দায়।

উল্লেখ্য সাক্ষ্য প্রমানের মাধ্যমে মামলার দায় সৃষ্টি হয় বা প্রতিষ্ঠা হয়। 

ধারা-১০২ঃ দেওয়ানী মামলায় সাক্ষীর অভাবে যে হেরে যায় তিনি কিছু প্রমান করতে চাইলে তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

ধারা-১০৩ঃ কোন নির্দিষ্ট ঘটনার কোন অস্তিত্বকে যিনি বিশ্বাস করাতে চান তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

ধারা-১০৪ঃ একটি ঘটনা প্রমানের জন্য অন্য একটি ঘটনা প্রমান করতে হলে যিনি তা প্রমান করতে চান তাকেই তা প্রমান করতে হবে। অর্থাৎ একই ব্যক্তিকে প্রমান করতে হবে। যেমনঃ রহিম আদালতে করিমের মৃত্যুকালীন ঘোষনা প্রমান করতে চায়। করিমের মৃত্যু হয়েছে তা রহিমকেই প্রমান করতে হবে।

ধারা-১০৫ঃ বিশেষ ব্যতিক্রমের মধ্যে আসামী যদি কোন ঘটনাকে নিয়ে যেতে চায় তবে তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

প্লি-অব-এলিভাইঃ অর্থাৎ ঘটনার সময় ঐ ব্যক্তি এতই দূরে অব¯’ান করছিল যে উক্ত দূরত্ব অতিক্রম করে এসে ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।

ধারা-১০৬ঃ বিশেষ কিছু জানা থাকলে যিনি তা প্রমান করতে চান তাকেই তা প্রমান করতে হবে। যেমনঃ এ, বি, সি, ডি একত্রে ট্রেনের টিকেট কেটে খুলনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন বি,সি,ডি টিকিট সহ যশোর নেমে গেলেন। বিনা টিকিটে রেল ভ্রমনে এ এর বিশেষ কিছু জানা থাকলে তা এ কেই প্রমান করতে হবে। ধারা-১০৭ ও ১০৮ একত্রে পড়তে হবে।

ধারা-১০৭ঃ জীবিত ব্যক্তি সম্পর্কে অনুমান করা হয়েছে। ৩০ বছর জীবিত ব্যক্তিকে কেউ মৃত ঘোষণা করতে চাইলে তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

ধারা-১০৮ঃ ৭ বছর ধরে নিখোঁজ/মৃত ব্যক্তিকে যদি কেউ জীবিত প্রমান করতে চায় তাহলে তাকেই তা প্রমান করতে হবে।

অর্থাৎ ৩০ বছর যাবত জীবিত কোন ব্যক্তিকে কেউ মৃত ঘোষনা করতে চাইলে তাকেই প্রমান করতে হবে যে, ৭ বছর যাবত ঐ ব্যক্তি নিখোঁজ বা মৃত। এবং ৭ বছর যাবৎ কোন নিখোঁজ বা মৃত ব্যক্তিকে কেউ যদি জীবিত প্রমান করতে চায় তাহলে তাকেই তা প্রমান করতে হবে যে ঐ ব্যক্তি ৩০ বছর যাবৎ জীবিত। (ঠ.ঠ.ও)

ধারা-১১১ঃ আ¯’ার পাত্র যিনি প্রমানের দায় তার। যেমনঃ এডভোকেট-মক্কেল, ডাক্তার-রোগী, ছাত্র-শিক্ষক, পিতা-পোষ্য, ট্রাস্টী-সুবিধাভোগী প্রমানের দায় এদের। জবানবন্দী, জেরা, পুনঃজবানবন্দী, পুনঃজেরা

ধারা-১৩৭ঃ শুধুমাত্র জবানবন্দি, জেরা, পুনঃজবানবন্দী ও পুনঃজেরার সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে।

সাক্ষী উপ¯’াপনকারীর সমর্থনে সাক্ষী যে বিবৃতি প্রদান করে তাকে জবানবন্দী বলে।

জবানবন্দীর পর প্রতিপক্ষ যখন সেই সাক্ষীকে সাক্ষ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যদি কোন প্রশ্ন করে তখন তাকে জেরা বলে।

জেরা করার পর সাক্ষী হাজিরকারী ব্যক্তি যখন ঐ সাক্ষীকে পুনঃরায় প্রশ্ন করেন তখন তাকে পুনঃজবানবন্দী বলে।

পুনঃজবানবন্দীর পর প্রতিপক্ষ যখন ঐ ব্যক্তিকে পুনরায় জেরা করে তখন তাকে পুনঃজেরা বলে।

ধারা-১৩৮ঃ সাক্ষীর ক্রমবিন্যাস বা সাক্ষ্য দেওয়ার ক্রমবিন্যাসঃ প্রথমে জবানবন্দী গ্রহণ করা হবে জেরা করা হবে পুনঃজবানবন্দী গ্রহণ পুনঃজেরা

জবানবন্দী গ্রহণ করার পর যদি জেরা করা না যায় তবে উক্ত জবানবন্দী তার মূল্য হারায়।

যখন পর্যাপ্ত সাক্ষ্য পাওয়া যায় না। তখনই কেবল জেরা ব্যতিত জবানবন্দী কার্যকর।

সাক্ষীকে জেরার শেষে বলা হয় তিনি যা বললেন তা সবই মিথ্যা। একে সাজেশন বলে।

ধারা-১৩৯ঃ দলিল উপ¯’াপনের জন্য বলা হলে তাকে জেরা করা যাবে না। সাক্ষী হিসেবে উপ¯’াপন করলেই কেবল জেরা করা যায়।

ধারা-১৪০ঃ চরিত্র বিষয়ে সাক্ষীকে জেরা করা যায় ও পুনঃজবানবন্দী গ্রহণ করা যায়।

ধারা-১৪১ঃ ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন বা খবধফরহম ছঁবংঃরড়হ যে প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নেই নিহিত থাকে তাকে খবধফরহম ছঁবংঃরড়হ যে প্রশ্নের উত্তর প্রশ্নেই নিহিত থাকে তাকে খবধফরহম ছঁবংঃরড়হ বলে।

ধারা-১৪২ঃ প্রতিপক্ষ আপত্তি করলে আদালতের অনুমতি ব্যতিত জবানবন্দী ও পুনঃজবানবন্দী সময় ইঙ্গিতবাহী প্রশ্ন করা যাবে না।

পরিচয়মূলক ব্যাপারে জবানবন্দীতে ইঙ্গিতবাহি প্রশ্ন করা যায়।

ধারা-১৪৩ঃ জেরা ও পুনঃজেরায় ইঙ্গিতবাহি প্রশ্ন করা যায়। টেকনিকঃ না হ্যাঁ না হ্যাঁ জবানবন্দী জেরা পুনঃজবানবন্দী পুনঃজেরা

ধারা-১৪৪ঃ দলিলের বিষয়ে অন্য কোন লোকের বিবৃতি প্রাসঙ্গিক হলে তা গ্রহণ করা যাবে।

ধারা-১৪৫ঃ পূর্ববর্তী কোন সাক্ষ্য বর্তমান সাক্ষ্যের সাথে সাংঘর্ষিক হলে পূর্ববর্তী সাক্ষ্য দেখানোর প্রয়োজন নাই। শুধুমাত্র সাংঘর্ষিক অংশটুকুর উপরে দৃষ্টিপাত করলেই হবে।

ধারা-১৪৬ঃ জেরায় যে সকল প্রশ্ন করা যায়ঃ

(১) সত্যবাদীতা যাচাইয়ের জন্য।

(২) পরিচয় ও মর্যাদা সম্পর্কে।

(৩) বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করার জন্য চরিত্রে আঘাত করে।

(৪) যে প্রশ্নের উত্তর অপরাধের দিকে টানিয়া লইয়া যায় সে প্রশ্নের উত্তর দিতে সাক্ষী বাধ্য নয়।

ধারা-১৫১ঃ অশালীন ও কুৎসামূলক কেলেংকারী জড়িত প্রশ্ন করা হলে আদালত এডভোকেটকে নিষেধ করবেন।

বিচার্য বিষয় যদি খারাপ চরিত্র নিয়ে গঠন করা হয় তবে খারাপ চরিত্র মামলায় প্রাসঙ্গিক।

ধারা-১৫২ঃ অপমান ও বিরক্তিকর প্রশ্ন করা হলে আদালত এডভোকেটকে নিষেধ করবেন।

ধারা-১৫৪ঃ বৈরী সাক্ষী বা বিপক্ষ আশ্রিত বা পক্ষপাতদুষ্ট সাক্ষী। সাক্ষ্য উপ¯’াপনকারী ব্যক্তির বিপক্ষে যখন ঐ ব্যক্তি সাক্ষী দেয় তখন তাকে বৈরী সাক্ষী/ পক্ষপাতদুষ্ট/বিপক্ষ আশ্রিত সাক্ষী বলে। (যখন সাক্ষী বৈরী হয় তখন নিজের সাক্ষীকে জেরা করা যায়)

বৈরী সাক্ষী ঘোষনার জন্য সাক্ষী উপ¯’াপনকারী ব্যক্তি আদালতে আবেদন করবেন। আদালত বৈরী সাক্ষী ঘোষনা করবেন।

যার দোষ প্রমানিত হয়েছে এবং সহযোগী অপরাধীদের পুংখানুপুংখ বিবরনের ভিত্তিতে ক্ষমা পূরণের শর্তে দুষ্কর্মের সহযোগীদের বিবরণ যিনি দেন তাকে দুষ্ককর্মের সহযোগী সাক্ষী বা রাজসাক্ষী বলে।

যখন পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায় না তখন রাজসাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

উল্লেখ্য যে রাজসাক্ষী বিশ্বাসের অযোগ্য।

কোন আসামীর স্বীকারোক্তি/ঈড়হভবংংরড়হ এর ভিত্তিতে সব আসামীদের শাস্তি প্রদান করা যায়।

আদালতের যখন কোন সাক্ষ্য প্রমানের প্রয়োজন হয় তখন আদালত আদালত তার সাক্ষীকে ডাকতে পারেন। আদালতের সাক্ষীকে বাদী, বিবাদী বা পক্ষ বিপক্ষ উভয়েই জেরা করতে পারে।

ধারা-৪৫ঃ নিু লিখিত বিষয়ে আদালত বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহণ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞকে বিশেষ ডিগ্রি বা ঐ বিষয়ে অভিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নাই।

(১) বিদেশী আইন,

(২) বিজ্ঞান

(৩) কলা বা চার“কলা

(৪) হস্তশিল্প বা হস্তাক্ষর বা টিপসই বিশারদ

ধারা-১৫৯ঃ স্মৃতি পুনঃজ্জীবিত করণ বা কোন কিছু লিখে রাখলে ঐ বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় তা দেখে স্মৃতিপুনঃজ্জীবিত করা যায়। চার্জশীট দায়েরের পর মামলার আই.ও বা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উক্ত ধারার বিধান বলে স্মৃতি পুনঃর“জ্জীবিত করেন।

ধারাঃ ১৬৪ঃ আদালতে কোন দলিল পরিদর্শনের জন্য ডাকা হলে তা দাখিল না করলে পরবর্তীতে ঐ মামলায় দলিলটি ব্যবহার করা যাবে না।

ধারা-১৬৬ঃ বিচারক যে কোন বিষয় প্রাসঙ্গিক হিসেবে নিতে পারেন।

ধারা-১৬৭ঃ যে ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে সাক্ষ্য গ্রাহ্য বা অগ্রাহ্য করা হয়। ০০ লানের্ড ল’ একাডেমী ০০