বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা, ১৯৭২

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা, ১৯৭২

  • বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা, ১৯৭২
  • বার কাউন্সিল একটি বিধিবদ্ধ বা সংবিধিবদ্ধ বা স্বায়ত্বশাসত বা চিরস্থায়ী বা যৌথ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা।
  • এটি প্রেসিডেন্ট অর্ডার বা অধ্যাদেশ দিয়ে গঠিত হয় বলে এটি বিধিবদ্ধ বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বলে ।
  • বার কাউন্সিল নিয়ন্ত্রয় করে সরকার কিন্তু এর কার্যক্রম পরিচালনা করে বার কাউন্সিল তাই এক স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বলে ।

বার কাউন্সিলে ৩ ধরনের সংগঠন থাকবে, এই কারণে একে যৌথ প্রতিষ্ঠান বলে । যথা:-

১) বার কাউন্সিল (সমগ্র বাংলাদেশে ১টি)

২) বার এসোসিয়েশন (সমগ্র বাংলাদেশে ৮১টি)

৩) বার কাউন্সিল ট্রইবুন্যাল বার কাউন্সিল ( ১ বা একাধিক গঠন করা যায় পূর্বে ৩টি বেশী গঠন করা যেত না)

  • বার কাউন্সিল ১৯৭২ সনের ১৭ই মে, সর্বপ্রথম প্রকাশিত বা প্রতিষ্ঠিত বা প্রণীত বা পাশ হয় ।
  • ৪৬ নং প্রেসিডেন্ট অর্ডার বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে পাশ হয় ।
  • বার কাউন্সিল কার্যকর হয় বা বলবৎ হয় ১৯৭১ সনের ২৬ শে মার্চ ।
  • বার কাউন্সিলে অনুচ্ছেদ ৪৬টি, বিধি আছে মোট ১০১টি ।
  • পেশাগত আচরন বিধি নিয়ে অধ্যায় আছে ৪টি ।

বি:দ্র : বার কাউন্সিলের ধারা ও অনুচেছদগুলো পরিবর্তন করতে পারে সরকার / আইনসভা / জাতীয় সংসদ / পার্লামেন্ট ।

  • বাংলা ও ইংরেজী নিয়ে কোন সাংঘর্ষিকতা তৈরী হলে বাংলা গ্রহনযোগ্য ।
  • বিধিগুলো পরিবর্তন করতে পারে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ।
  • আদেশগুলো পরিবর্তন করতে পারেন বাংলাদেশ মহামান্য হাইকোর্ট / সুপ্রীম কোর্ট ।
  • Option – এ হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্ট একসঙ্গে থাকলে, আদি এখতিয়ার হাইকোর্ট -এর থাকায়, হাইকোর্ট প্রাধান্য বা অগ্রাধিকার পাবে ।
  • বার কাউন্সিল একটি স্বায়ত্বশাসিত সরকারী সংস্থা বা Statutory Body বা Autonomous Body, সুতরাং এটি নিয়ন্ত্রন করে সরকার ।
  • বার কাউন্সিল একটি বিশেষ আইন বা মৌলিক আইন বা ঝঢ়বপরধষ ষধি ।
  • ১লা জুলাই থেকে ৩ বছরের জন্য নির্বাচনের মাধ্যমে বার কাউন্সিলের কমিটি গঠন করা হয় । তবে এর পূর্বে অবশ্যই ৩ শে মে -এর মধ্যে বার কাউন্সিল – এর নির্বাচন অনুষ্টিত হতে হবে ।
  • নির্বাচনের ৩০ দিন পূর্বে ভোটার হবার জন্য বা এসোসিয়েসন – এ আবেদন করতে হবে ।
  • ভোট হবার ১০ দিন পূর্বে অবশ্যই ভোটার তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে । মনে রাখা প্রয়োজন
  • বার কাউন্সিল বা সংস্থার নির্বাচন হয় ৩ বছর পর পর । আর বার এসোসিয়েসন বা সমিতির নির্বাচন হয় ১ বছর পর পর ।
  • অনুচ্ছেদ ২(ক) : এ্যাডভোকেট : যিনি বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত ব্যক্তি, তিনিই এ্যাডভোকেট ।
  • একজন এ্যাডভোকেট বাংলাদেশের সকল বিচারিক আদালত ও ট্রাইব্যুনাল – এ মামলা পরিচালনা করারা ক্ষমতা রাখেন । – অনুচ্ছেদ ১৯ ।
  • অনুচ্ছেদ ২(কক) : এ্যাটর্নি জেনারেল : এ্যাটর্নি জেনারেল ৩ ধরনের হবে –

১) ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল

২) এ্যাসিটেন্ট এ্যাটর্নি জেনারেল

৩) এ্যাটর্নি জেনারেল

  • সরকারী মামলা পরিচালনা করার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রত্যেকাট ব্যক্তি এ্যাটর্নি জেনারেল – এর অর্ন্তভুক্ত হবে ।
  • সরকারী উকিল মানেই এ্যাটর্নি জেনারেল ।
  • অনুচ্ছেদ ২(খ) : বার কাউন্সিল ও বার এসোসিয়েসন :
  • আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত সমিতিকে বার এসোসিয়েসন বলে ।
  • আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত সংস্থাকে বার কাউন্সিল বলে ।
  • বাংলাদেশে ২ ধরনের বার এসোসিয়েসন থাকবে-

১) সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েসন

২) স্থানীয় বার এসোসিয়েসন

  • একটি জেলায় এক বা একধিক বার এসোসিয়েসন থাকতে পারে ।
  • স্থানীয় বার এসোসিয়েসন কখনই সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েসন – এর অর্ন্তভুক্ত হবে না ।
  • বার কাউন্সিল সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০১০ সালের ১০ ই ডিসেম্বর বাংলা ১৪১৯ সনের ২৬ শে অগ্রহায়ন ।

অনুচ্ছেদ ৩ : বার কাউন্সিল একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান যার চিরস্থায়ী উত্তরাধীকারী থাকবে ।

অনুচ্ছেদ ৩ (২) :

  1. বার কাউন্সিল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ধারন করতে পারবে ।
  2. চুক্তি করতে পারবে
  3. অন্যের বিরূদ্ধে মামলা করতে পারবে
  4. নিজ নামে মামলা হলে প্রতিদ্বন্দিতা করতে পারেবে
  5. এককথায় আইনজীবী হিসেেেবকোন ব্যক্তির আইন পেশার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বার কাউন্সিল নিয়ন্ত্রন করে বিধায় বার কাউন্সিলকে সমগ্র বাংলাদেশের আইনজীবীদেও অভিভাবক বরা হয় ।

অনুচ্ছেদ ৫ : বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের গঠন:- বার কাউন্সিলের মোট সদস্য সংখ্যা ১৫ জন । যথা:-

  1. পদাধিকারবলে বাংলাদেশের এ্যাটর্নি জেনারেল ( ১ জন) ।
  2. সমগ্র বাংলাদেশের আইনজীবীদের মধ্য থেকে নির্বচিত ( ৭ জন) ।
  3. অঞ্চলভিত্তিক আইনজীবীদের মধ্য থেকে নির্বচিত ( ৭ জন) ।

১ + ৭ + ৭ = ১৫ জন – (৭ + ৭) = ১৪ জন (নির্বাচিত)

অনির্বাচিত = ১ জন

অনুচ্ছেদ ৫(ক) : বার কাউন্সিলের সদস্যপদ : কোন এ্যাডভেকেট একাধারে ২ বারের অধিক বার কাউন্সিলের সদস্যপদ গ্রহন করতে পারবে না । অর্থাৎ কোন সদস্য উপর্যুপরি ২ বারের বেশী বার কাউন্সিলের কার্যালয়ে অবস্থান করতে পারবে না ।

অনুচ্ছেদ ৬ : চেয়ারম্যান বা সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান বা সহ-সভাপতি : বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বা সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান বা সহ-সভাপতি হবেন-

  1. পদাধিকারবলে এ্যাটর্নি জেনারেল হবেন বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বা সভাপতি
  2. বার কাউন্সিলের সদস্যগণের মাধ্যমে নির্বাচিত একজন হবেন ভাইস চেয়ারম্যান বা সহ-সভাপতি

বি:দ্র: কোন ভাইস চেয়ারম্যান বা সহ-সভাপতি পদ শূণ্য হলে নির্বাচিন সদস্যগণের মধ্য থেকে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে ভাইস চেয়ারম্যান বা সহ-সভাপতি নির্বাচিত করা হবে ।

  • কোন সদস্যপদ শুন্য হলে তালিকাভুক্ত সদস্যগণের মধ্য থেকে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিই হবেন পরবর্তী সদস্য ।
  • ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলা ২৬ শে অগ্রহায়ন ১৪১৯ সালে ৪৪ নং আইন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় ।
  • সরকার জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজ – এর মধ্য থেকে বা বিচার বিভাগীয় ব্যক্তিবর্গের মধ্য থেকে বার কাউন্সিলের সচিব বা সেক্রেটারী নিয়োগ দেবেন । – অনুচ্ছেদ ৬(ক)

অনুচ্ছেদ ৮: যে বছর বার কাউন্সিলের নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হবে । সেই বছরের ৩ শে মে – এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে ।

বি:দ্র: বার কাউন্সিলের গ্রুপভিত্তিক নির্বাচনের জন্য সদস্য সংখ্যা হবে ৭ জন । ফোরাম হবে ৫ জনের ।

  • নির্বাচনের মনোনয়ন ফি ১,০০০/- টাকা ।
  • নির্বাচনের ৪৫ দিন পূর্বে তফসিল ঘোষনা করতে হবে ।
  • যাচাই বাছাই – এর সময়কাল ৭ দিন ।

অনুচ্ছেদ ১০: বার কাউন্সিলের কার্যাবলী:

  1. এ্যাডভোকেটদের তালিকাভুক্তিকরন ও এই উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেয়া, সনদ প্রদান করা এবং কোন এ্যাডভোকেটকে তালিকা থেকে বাদ দেয়া ।
  2. এ্যাডভোকেটদের বিরূদ্ধে পেশাগত অসদাচরনের বিচার ও শাস্তি দেয়া ।
  3. এ্যাডভোকেটদের আচার-আচরন ও নৈতিকতা নির্ধারন করা ।
  4. আইন শিক্ষার উন্নয়ন করা (আইন পেশার নয়)
  5. বার কাউন্সিলের সদস্যগণের জন্য নির্বাচনের আয়োজন করা ।

অনুচ্ছেদ ১১: বার কাউন্সিলের কমিটি:

  1. নির্বাহী কমিটি / Executive Committee : সদস্য সংখ্যা ৫ জন (বার কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ) ।
  2. আর্থিক কমিটি / Finance Committee : সদস্য সংখ্যা ৫ জন (বার কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ) ।
  3. আইন শিক্ষা কমিটি / Legal Education Committee : সদস্য সংখ্যা ৯ জন । নির্বাচিত সদস্যদের মধ্য থেকে ৫ জন এবং অনির্বাচিত ৪ জন । অনির্বাচিত ৪ জনের মধ্য থেকে ২ জন হবে বিশ্ববিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে এবং বাকি ২ জন তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের মধ্য থেকে ।

৯ জন = ৫ জন + ২জন + ২ জন

৫ জন সদস্য + ২ জন শিক্ষক + ২ জন আইনজীবী /তালিকাভুক্ত এ্যাডবোকেট

অনুচ্ছেদ ১১(খ) : তালিকাভুক্ত কমিটি /Enrollment Committee : ২০১২ সালের ১ নং আইন দ্বারা প্রতিস্থাপিত । মোট সদস্য ৫ জন ।

  1. প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনিত আপীল বিভাগের ১ জন বিচারপতি হবেন তালিকাভুক্ত কমিটির চেয়ারম্যান বা সভাপতি ।
  2. প্রধান বিচারপতি কর্তৃক মনোনিত হাইকোর্ট বিভাগের ২ জন বিচারপতি ।
  3. এ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকারবলে তালিকাভুক্তি কমিটির সদস্য ।
  4. বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যগণের মধ্য তেকে মনোনীত একজন হবেন তালিকাভুক্তি কমিটির সদস্য।

৫ = ১ + ২ + ১ + ১

৫ = আপীল বিভাগ (১জন) + হাইকোর্ট ( ২জন) + এ্যাটর্নি জেনারেল ( ১ জন) + সদস্য ( ১জন)

মনে রাখা প্রয়োজন : তালিকাভুক্তির জন্য কত বছরের আইন পেশায় অভিঞ্জ আইনজীবীর নিকট ৬ মাস আইন চর্চায় নিয়োজিত থাকতে হবে ।

  • এই সময়ের মধ্যে ৫টি দেওয়ানী ও ৫ টি ফৌজদারী মোট ১০টি মামলার অভিঞ্জতা অর্জন করতে হবে ।
  • হাইকোর্টে প্রাকটিস্ করতে হলে ন্যূনতম ২৫টি মামরার নিম্ন আদালতে আইন পেশার অভিঞ্জতা থাকতে হবে ।
  • তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় পাশ করার পর ৬ মাসের মধ্যে সার্টিফিকেট অর্জন করতে ব্যর্থ হলে তার সনদ বাতিল করা যাবে ( ৫,০০০/- টাকা জমা দিতে হয় ) ।
  • তালিকাভুক্তির জন্য সচিব বরাবর ২,৪০০/- টাকা জমা দিতে হয় । অতিরিক্ত ফি বা বাৎসরিক ফি ২০০/- টাকা।
  • বি:দ্র: বার কাউন্সিল তার প্রয়োজন মত যত খুশি তত সংখ্যক কমিটি গঠন করতে পারবেন ।
  • বার কাউন্সিলের সকল কমিটির সচিব হবে পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের সচিব ।

অনুচ্ছেদ ২১: হাইকোর্ট বিভাগে আইন পেশা করার জন্য ৩টি যোগ্যতা থাকতে হবে –

ক)বাংলাদেশের কোন অধঃস্তন আদালতে ন্যূনতম ২ বছর আইন পেশার অভিঞ্জতা থাকতে হবে অথবা আইনে সম্মান পাশ বা বাংলাদেশের বাইরের কোন আদালতে ।

খ)এ্যাডভোকেট হিসেবে আইন পেশায় নিয়োজিত থাকতে হবে । ব্যারিস্টারও এর অর্ন্তভুক্ত হবে ।

গ)বার কাউন্সিলের অন্যান্য শর্তাবলী পূরণ করতে হবে ।

অনুচ্ছেদ ২৭(১) : এ্যাডভোকেট হবার যোগ্যতা :

  1. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে ।
  2. ন্যূনতম বয়স ২১ বছর হতে হবে । ( বয়সের সর্বোচ্চ – এর কোন সীমা নেই )
  3. আইন বিষয়ে ডিগ্রি থাকতে হবে – বার কাউন্সিল কর্তৃক স্বীকৃত ।
  4. এ্যাডভোকেট তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় পাশ করতে হবে ।
  5. নিবন্ধন ফি দিতে হবে এবং বার কাউন্সিলের অন্যান্য শর্তাবলী পূরন করতে হবে ।

অনুচ্ছেদ ২১(১)(ক) : মোক্তারগণও এ্যাডভোকেট হতে পারবেন । একজন ব্যক্তি ৭ বছর মোক্তার হিসেবে কাজ করলে এবং আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করলে তালিকাভুক্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারেবে ।

অনুচ্ছেদ ২৭(৩) : এ্যাডভোকেট হবার অযোগ্যতা : কোন ব্যক্তির ২’টি অযোগ্যতা থাকলে এ্যাডভোকেট হতে পারবেনা । যথা-

  1. সরকারী চাকুরী থেকে নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে বরখাস্ত হলে বা অপসারিত হলে, অপসারিত হওয়ার পরবর্তী ২ বছর অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত ।
  2. নৈতিক অবক্ষয়জনিত কারণে দন্ডিত হলে, দন্ডিত হওয়ার পরবর্তী ৫ বছর অতিক্রম না হওয়া পর্যন্ত ।

টেকনিক:

  • সরকারী চাকুরী থেকে বরখাস্ত = ২
  • দন্ডিত = ৫

অনুচ্ছেদ ৩২: পেশাগত অসদাচরনের অভিযোগ: একজন এ্যাডভোকেট পেশাগত অসদাচরনের করলে যেকোন ব্যক্তি তার বিরূদ্ধে বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ বা নালিশের মাধ্যমে দরখাস্ত দায়ের করতে পারবেন । অভিযোগের যৌক্তিকতা থাকলে বার কাউন্সিলঅনুচ্ছেদ ৩৩-এর ক্ষমতাবলে ট্রাইবুন্যাল গঠন করবেন।

  1. সচিব ট্রাইবুন্যাল -এর সেক্রেটারী পদাধিকার বলে ।
  2. দরখাস্তের সাথে অবশ্যই হলফনামা সংযুক্ত করতে হবে ।

অনুচ্ছেদ ৩২(১): পেশাগত অসদাচরনের জন্য একজন আইনজীবী দোষী প্রমাণিত হলে ট্রাইবুন্যাল ৩’ধরনের শাস্তি দিতে পারে-

  1. তিরস্কার/ মৃদু ভর্ৎসনা
  2. সাময়িকভাবে আইন পেশা হতে বরখাস্ত / আইন চর্চা হতে নয় ।
  3. চিরতরে আইন পেশা হতে বহিষ্কার / সনদ বাতিল ।

বি:দ্র: দরখাস্তর সাথে ১,০০০/- টাকা জমা দিতে হবে ।

আইনজীবীর বিরূদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে অভিযোগকারীকে ৫০০/- ক্ষতিপূরণের আদেশ দেয়া যাবে।

বি:দ্র: শুনানীর আগে অভিযুক্ত আইনজীবীকে ও এ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিশ প্রদান করতে হবে । ট্রাইবুন্যাল জেলা ও দায়রা জজ – এর ক্ষমতা রাখেন । এবং আপীল হাইকোর্টে । মামলা শুনানীর আগে ২১ দিন বা ৩ সপ্তাহ আগে আইন জীবী ও এ্যাটর্নি জেনারেলকে নোটিশ দিতে হবে । অভিযুক্ত এ্যাডভোকেট নোটিশ পাবার ৭ দিনের মধ্যে উত্তর দেবেন ।

শাস্তির বিরূদ্ধে করণীয়: অনুচ্ছেদ ৩৬ মতে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তি ৯০ দিন বা ৩ মাসের মধ্যে হাইকোর্টে আপীল দায়ের করবেন । অথবা অনুচ্ছেদ ৩৪(৮)  এ ১ মাস বা ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইবুন্যাল -এর নিকট রিবিউ দায়ের করতে হবে ।

অনুচ্ছেদ ৩৩: বার কাউন্সিলের ট্রাইবুন্যাল – এর মোট সদস্য সংখ্যা ৩ জন ।

১ বা একাধিক ট্রাইবুন্যাল গঠন করা যাবে ।

ট্রাইবুন্যাল – এর মোট সদস্য:-

  1. বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যগণের মধ্য থেকে ২ জন ।
  2. তালিকাভুক্ত আইনজীবীগণের মধ্য থেকে ১ জন ।

২ + ১ = ৩

নির্বাচিত সদস্য + তালিকাভুক্ত সদস্য = ৩ জন

বি:দ্র: আইন পেশায় যিনি বয়োজেষ্ঠ্য তিনি হবেন ট্রাইবুন্যাল -এর চেয়ারম্যান / সভাপতি ।

অনুচ্ছেদ ৪০: বিধি প্রনয়ন: বার কাউন্সিরের বিধি প্রনয়নের আগে সরকারের পূর্ব অনুমতি লাগবে । অর্থাৎ গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে ।

অনুচ্ছেদ ৪১: কোন ব্যক্তি নিম্নে আদালতে বা হাইকোর্টে বিভাগের এ্যাডভোকেট না হয়েও আইন পেশা করলে এর শাস্তি ৬ মাস বা ১৮০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হবে ।

পেশাগত অসদাচরন নিয়ে অধ্যায় আছে ৪টি –

  1. আইনজীবীর সাথে (বিধি ১১টি)
  2. মক্কেলের সাথে (বিধি ১৪টি)
  3. আদালতের সাথে (বিধি ৯টি)
  4. জনগণের সাথে (বিধি ৮টি) আইনজীবীর (দায়িত্ব ও কর্তব্য)

এই ৪টি আচরন বিধিতে মোট বিধি আছে ৪২ টি ।

জেনে রাখা ভালো:

  • সাধারন আসনে ভোট ৭টি
  • দলগত আসনে ভোট ১টি এ
  • কজন আইনজীবী মোট ভোট দিবেন ৮টি । ’X’ চিহ্ দিয়ে ভোট দিতে হয় ।
  • ইলেকশন ট্রাইবুন্যাল – এর সদস্য সংখ্যা ৩ জন ।
  • বার কাউন্সিলের মেয়াদ শুরুর তারিখ হতে ৩০ দিন বা ১ মাসের মধ্যে বার কাউন্সিলের সচিব ১ম সভা আহবান করবেন ।
  • সাধারন সভা আহবান করবেন চেয়ারম্যান বা সভাপতি । তার অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি . ভাইস চেয়ারম্যান ।
  • সাধারন সভা নির্ধারনের সময়কাল ১ সপ্তাহ / ৭ দিন ।
  • বার কাউন্সিলের সভার জন্য ৫ জনের ফোরাম হতে হবে এবং এক তৃতীয়াংশ উপস্থিত থাকতে হবে ।
  • বিধি ৪৯: বার কাউন্সিলের সম্পাদক বা সাধারন সম্পাদক পদাধিকারবলে সেক্রেটারী বা সচিব । আসতে পারে:
  • বিধি ৫৮ অনুযায়ী আইনজীবীর তালিকাভুক্তির আবেদন করতে হয় ফরম ’এ’ – তে ।
  • রেজিস্ট্রেশন – ফরম ’জি’ তালিকাভুক্তি / ফরম ফিলাপ – ফরম ’এ’
  • বিধি ৬০(১) : শিক্ষানবীশ: একজন এ্যাডভোকেট বার কাউন্সিলের অনুমতি ব্যতিত ৪ জনের বেশী শিক্ষানবীশ গ্রহন করতে পারবে না ।
  • বিধি ৬০(৩): কোন প্রার্থী তার তালিকাভুক্তির আবেদনপত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিলে বা ভুল তথ্য দিলে ৫ বছরের জন্য এ্যাডভোকেট হিসেবে নিবন্ধিত হবার যোগ্যতা হারাবে ।
  • ২ – সরকারী
  • ৫ – দন্ডিত
  • ৫ – ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে