দেওয়ানী কার্যবিধি-১৯০৮
এই আইনটি ৫নং আইন।
কার্যকর ১ লা জানুয়ারী ১৯০৯ ইং
এটি পদ্ধতিগত আইন। তবে এর কিছু ধারা ও আদেশে প্রতিকারের বিধানও রয়েছে বিধায় এটিকে পদ্ধতিগত ও মূল আইনও বলা যায়। মূলত আমরা এটিকে পদ্ধতিগত আইন হিসেবে ধরে থাকি। ১৯০৮ সালের ৫ নং আইন দ্বারা ২১ শে মার্চ দেওয়ানী কার্যবিধি পাশ করা হয়। ১৯০৯ সনের ১লা জানুয়ারী থেকে কার্যকর হয়। ইংরেজী নাম হবে Code of Civil Procedure।
দেওয়ানী আইন ও দেওয়ানী কার্যবিধি এক নয়। ১৯০৮ সালের আগেও দেওয়ানী কার্যবিধি প্রচলন ছিলো। ১৮৮২ সালে দেওয়ানী কার্যবিধি নামক একটি আইন ছিল কিন্তু তার কোন আদেশ ছিল না। তখন আদেশ ধারা একসাথে মিলে ছিলো ৬৫৩ টি ধারা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৪৮ ও ৫০ নং প্রেসিডেন্ট আদেশের দ্বারা দেঃ কাঃ বিধি কার্যবিধি জনিত আইনে পরিনত হয়। বাংলাদেশে দেঃ কাঃ বিধি কার্যকর হয় ১৯৭২ সালের ২৬ শে মার্চ।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ হইতে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে যতগুলো আইন পাশ হয়েছে তাহা আদেশের মাধ্যমে পাশ হইয়াছে।
দেওয়ানী কার্যবিধিকে ২ ভাগে ভাগ করা যায় যথাঃ-
ক) ধারা
খ) আদেশ।
দেঃ কাঃ বিধিতে ধারা ১৫৮ টি এবং আদেশ ৫১টি। ৫টি তফসিল রয়েছে এবং ১১ অধ্যায় বিভক্ত।
- ধারাঃ ধারাকে পরিবর্তন করতে পারে জাতীয় সংদস বা পার্লামেন্ট।
আদেশঃ আদেশকে পরিবর্তন করতে পারে মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট। উল্লেখ্য যে, হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্ট কোন প্রশ্নে একসাথে থাকলে সেখানে হাইকোর্টকে প্রাধান্য দিতে হবে। যে কোন একটি থাকলে যেটি থাকবে সেটিই হবে। আরও উল্লেখ্য যে, দেঃকাঃবিধি মূল ও পদ্ধতিগত আইন।
ধারা ২৬ঃ আরজির মাধ্যমে মামলা উপস্থাপন করতে হয় ২৬ ধারা মতে।
আদেশ-৪ (১) ঃ আরজি যে পদ্ধতি বা নিয়মে দাখিল করতে হয় তা আদেশ ৪ ও বিধি ১-এ আলোচনা করা হয়েছে। আদেশ-১(১)ঃ আদেশ ১ ও বিধি ১ এ বাদীর কথা বলা হয়েছে। যিনি আরজির মাধ্যমে নালিশ দায়ের করে তাকে বাদী বলে। আদেশ-১(৩)ঃ আদেশ ১ ও বিধি ৩ এ বিবাদীর কথা বলা হয়েছে। যিনি জবাব দান করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাকে বিবাদী বলে।
আদেশ-১ (১০)ঃ আদেশ ১ ও বিধি ১০ এ পক্ষভূক্তির কথা বলা হয়েছে।
পক্ষভূক্তি দুই প্রকার যথাঃ-
ক) মিস জয়েন্ডারঃ বাদ পড়লে পক্ষভূক্ত করিতে হয়।
খ) নন-জয়েন্ডারঃ অপ্রয়োজনীয় পক্ষভূক্ত করা হয়েছে।
সুপ্রীম কোর্ট ব্যতিত বাংলাদেশে ৫ প্রকারের দেওয়ানী আদালত থাকেঃ-
১) জেলা জজ আদালত ঃ ৫ লক্ষ টাকার আপীল করা হয়।
২) অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত জেলা জজের কাজ করে।
৩) যুগ্ম জেলা জজ আদালত ঃ ৪ লক্ষ এক টাকা হইতে অসীম।
৪) সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ঃ ২ লক্ষ ১ টাকা হইতে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
৫) সহকারী জজ আদালত ঃ ১ টাকা হইতে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য যে, অতিরিক্ত জেলা জজ ব্যতিত সকল আদালতে মূল মামলা দায়ের করা যায় এবং জেলা জজ আদালতে আপীল এখতিয়ার ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। উল্লেখ্য যে, আলাদা স্থানে সম্পত্তি হলেও উক্ত সম্পত্তি নিয়ে যদি মামলা করতে হয় তবে উক্ত সম্পত্তির মূল্য একত্রে করে সর্ব নিম্ন এখতিয়ার সম্পর্ন আদালতে মামলা দায়ের করতে হয়।
আদেশ-৩(৪)ঃ আদেশ ৩ ও বিধি ৪ এ কৌশুলীর নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
ধারা-৯ঃ মামলার প্রকৃতি বা ধরণ।
অন্য কোন আইন দ্বারা বারিত বা বাধা না থাকলে সকল মামলাই দেওয়ানী প্রকৃতির মামলা। উল্লেখ্য যে, সাধারনত স্বত্ব বা পদের অধিকার সংক্রান্ত মামলাই দেওয়ানী মামলা।
যেমনঃ-
- মসজিদের নামাজ পড়া অধিকার
- মন্দিরে পূজা করার অধিকার
- মিছিল করার অধিকার
- লাশ কবর দেয়ার অধিকার
- দাম্পত্য সম্পর্ক জনিত মামলা
- দেনমোহর
- পারিবারিক আদালত
- অর্থঋন।
একটি মামলার প্রয়োজনীয় উপাদান ৪টি, যথাঃ-
১) পক্ষদ্বয়
২) বিচার্য বিষয় বা বিষয়
৩) নালিশের কারণ
৪) প্রতিকার।
আদালতের এখতিয়ার ৩ প্রকারঃ
১) বিষয় ভিত্তিক এখতিয়ার (ধারাঃ ৯)
(২) আঞ্চলিক এখতিয়ার (ধারাঃ ১৬-২০)
(৩) আর্থিক এখতিয়ার (ধারাঃ ৬ ও ১৫)
আদালতের বিচার করার ক্ষমতাকে আদালতের এখতিয়ার বলে।
১) বিষয় ভিত্তিক এখতিয়ার ঃ – কোন মামলার বিচার কোন আদালতে করতে হবে বা যে আদালতে মামলার বিষয় নির্ধারণ করে তাকে বিষয়ভিত্তিক এখতিয়ার বলে।
যেমনঃ পারিবারিক আদালতের মামলা পারিবারিক আদালতেই করতে হবে
দেওয়ানী মামলাগুলো দেওয়ানী আদালতেই করতে হবে। ৯ ধারার বিধান সুস্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়।
২) আঞ্চলিক এখতিয়ারঃ আদালত একটি নির্দিষ্ট সীমা রেখা নিয়ে গঠিত, এই নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে বিচারিক এখতিয়ারকে আঞ্চলিক এখতিয়ার বলে। (এর ধারা হলোঃ ১৬-২০)
ধারা-১৬ ঃ বিষয়বস্তু যে আদালতের সীমা রেখার মধ্যে অবস্থিত সেই আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। অর্থাৎ বিষয়বস্তু যেখানে মামলা হবে সেখানে।
ধারা-১৭ঃ বিষয়বস্তু একাধিক সীমারেখার মধ্যে অবস্থিত হলে যে কোন একটি আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে।
ধারা-১৮ঃ বিষয়বস্তুর অবস্থান নিয়ে যদি সন্দেহ বা অনিশ্চয়তা দেখা দেয় তবে যে কোন এক আদালতে মামলা করা যাবে।
ধারা-১৯ঃ অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপুরনের মামলা এবং মানহানীর মামলার ক্ষেত্রে যেস্থানে উক্ত ক্ষতিটি সম্পাদিত হয়েছে অথবা যেখানে প্রকাশ পেয়েছে সেই স্থানের স্থানীয় সীমারেখার মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।
যেমনঃ মানহানীকর কোন কিছু জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় তবে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় মামলা করা যাবে এবং পত্রিকাটি যদি আঞ্চলিক হয় তবে ঐ অঞ্চলে মামলা দায়ের করতে হবে।
ধারা-২০ঃ যেখানে মামলার কারন ঘটে সেখানে মামলা দায়ের করতে হয়।
যেমনঃ মি. ক ঢাকা বসে মি. খ এর সাথে বরিশালে একটি চুক্তি করলো, মি.খ চুক্তি ভঙ্গ করলো। এখানে মামলার কারণটি ঢাকায় বসে করাতে কারণটি ঢাকায় ঘটেছিল বিধায় ঢাকাতে বা বরিশালে যে কোন এক জায়গায় মামলা করা যাবে।
উল্লেখ্য যে, মামলার কারণ যেখানে ঘটেছে সেখাইে মামলা করতে হবে। বিষয়ব যেখানেই থাকনা কেন।
আরও উল্লেখ্য যে, বিবাদী যেখানে বাস করে, লাভ জনক ব্যবসা করে সেখানে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে মামলা করা যাবে।
৩) আর্থিক এখতিয়ারঃ কোন আদালতে কত টাকা পর্যন্ত মামলা দায়ের করা যাবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়াকে আর্থিক এখতিয়ার বলে।
ধারা-৬ঃ আর্থিক এখতিয়ারের বাহিরে মামলা করলে আদালত সেই মামলার বিচার করার ক্ষমতা রাখে না।
ধারা-১৫ঃ এখতিয়ার সম্পর্ন সর্বনিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।
দেওয়ানী কার্যবিধির আদেশ-১৪
বিচার্য বিষয়ঃ যখন একপক্ষ স্বীকার করে এবং অন্যপক্ষ অস্বীকার করে কেবল তখন বিচার্য বিষয় গঠন হয়।
বিচার্য বিষয় দুই প্রকার যথা-
১) আইনগত
২) তথ্যগত।
আইনগতঃ যাহা আইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় তাহা আইনগত।
তথ্যগতঃ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যে বিচার্য বিষয় গঠন করা হয় তাহা তথ্য গত। ১ম শুনানীর ১৫ দিনের মধ্যে বিচার্য বিষয় গঠন করা হয়। বিচার্য বিষয় গঠনের পর ১২০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত শুনানীর দিন ধার্য্য করতে হয়। চূড়ান্ত শুনানীর ৭ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করতে হয়। রায় ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রী ঘোষণা করতে হবে।
Pleadings (প্লিডিংস) আরজি বা লিখিত জবাব
আদেশ ৬ = প্লিডিংস, আদেশ ৭ = আরজি, আদেশ ৮= লিখিত জবাব (তাই বলা যায় ৬ =৭ + ৮)
দেঃ কাঃ বিঃ আইনে কোথাও প্লিডিংস এর সংজ্ঞা পাওনা যায় না। তবে প্লিডিংস ব্যাখ্যা করলে পাওয়া যায় আরজি বা লিখিত জবাব। তাই বাদীর আরজিকে বাদীর প্লিডিংস এবং বিবাদীর লিখিত জবাবকে বিবাদীর প্লিডিংস বলে।
দেঃ কাঃ বিঃ আইনের ৬ আদেশের ১৬ বিধিঃ আরজি কর্তন- আরজির কিছু বাদ দেওয়াকে আরজি কর্তন বলে।
দেঃ কাঃ বিঃ আইনের ৬ আদেশের ১৭ বিধিঃ আরজি সংশোধন- আরজির কোন কিছু সংযোজন ও বিয়োজনের জন্য আরজি সংশোধন করা হয়। মামলার যে কোন পর্যায়ে আরজি সংশোধন করা যায়। আপীল পর্যায়ে দ্বিতীয় আপীল পর্যন্ত আরজি সংশোধন করা যায়।
আরজি সংশোধনের শর্ত সমূহঃ
(১) মোকদ্দমার প্রকৃতি ও বিষয়বস্তু অপরিবর্তিত রাখা
(২) ন্যায় বিচার যেন বিঘ্নিত না হয়
(৩) ১৪ দিনের মধ্যে আরজি সংশোধন করতে হয় (স্বাভাবিক নিয়ম)
দেওয়ানী কার্যবিধি আইনের আদেশ-৭ঃ
আরজির উপাদানগুলো যথা-
১) আদালতের নাম থাকতে হবে।
২) বাদীর নাম (পূর্ণ ঠিকানা)
৩) বিবাদীর নাম (ঠিকানা যতদূর জানা যায়)
৪) বাদী-বিবাদী যদি নাবালক বা মানুষিক বিকারগ্রস্থ থাকে তবে সে সম্পর্কে লিখতে হবে।
৫) আদালতে এখতিয়ার সম্পর্কে বিবৃতি
৬) মামলার কারণ সম্পর্কে বিবৃতি
৭) প্রতিকার সম্পর্কে বিবৃতি
৮) কোর্ট ফি ও বিষয়বস্তুর মূল্য সম্পর্কে বিবৃতি।
আদেশ-৭ বিধি-১০ঃ (আরজি ফেরৎ)
একটি মাত্র কারনে আদালত আরজি ফেরৎ প্রদান করে – ভুল আদালতে বা এখতিয়ার বিহিন আদালতে আরজি দায়ের করলে আদালত আরজি ফেরৎ প্রদান করে। আদালত যে কোন সময় আরজি ফেরৎ দিতে পারে। আরজি ফেরৎ দেওয়ার সময় আদালত আরজির উপরে পৃষ্ঠাংকন করবেন এবং মামলা ফেরৎ দেওয়ার কারণ লিপিবদ্ধ করবেন।
উদাহারনঃ ৪ লক্ষ টাকার মামলা দায়ের করতে হয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে কিন্তু তা যদি ভুল করে সহকারী জজ আদালতে দায়ের করা হয় তবে আদালত দেঃ কাঃ আইনের আদেশ ৭ বিধি ১০ মতে আরজি ফেরৎ প্রদান করিবেন।
আরজি ফেরতের বিরুদ্ধে করনীয়ঃ
- নতুন করে সঠিক আদালতে মামলা দায়ের করা (তামাদি বাধা হবে না)।
- আর্জি ফেরত এর দরখাস্তের বিরুদ্ধে করনিয় “আপিল”।
আদেশ-৭ বিধি ১১ঃ (আরজির খারিজ/নাকচ/প্রত্যাখ্যান/বাতিল) ঃ
৪টি কারনে আরজি খারিজ করা হয়, যথা-
১) মামলার কারণ না থাকলে।
২) বিষয়বস্তুর মূল্য কম দেখালে।
৩) কোর্ট ফি কম দিলে বা ভুল করিলে।
৪) অন্য আইন দ্বারা বারিত হলে।
এককথায়- মামলার কারন, বিষয়বস্তুর মূল্য, কোর্ট ফি ও অন্য আইন দ্বারা বারিত হলে আরজি খারিজ হয়। সাধারন আরজি সংশোধনের নিয়ম আদালত আদেশের ১৪ দিনের মধ্যে, যদি ২ ও ৩ নম্বর কারনে আরজি সংশোধন করতে হয় তবে তার মেয়াদ ২১ দিন।
আদেশ-৮ বিধি-১ (লিখিত জবাব)ঃ
লিখিত জবাব দাখিল করিতে হয় দেঃ কাঃ বিঃ আইনের আদেশ ৮ বিধি-১ মতে। ৩০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে হয়, যদিও এর জন্য আরও ৩০ দিন অতিরিক্ত সময় পাওয়া যায়।
আদেশ ৮(৬)১ঃ সেট অফ বা দাবী সমন্বয়। যখন টাকার মামলায় বাদীর দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদী পাল্টা টাকা দাবী করে, যেখানে বিবাদীর টাকার পরিমান কম তাকে set of বা দাবী সমন্বয় বলে।
যেমন- রহিম ২ লক্ষ টাকার দাবীতে করিমের বিরুদ্ধে মামলা করে, করিম লিখিত জবাবে বলছে আমি রহিমের কাছে ৫০ হাজার টাকা পাই। আদালত এই ব্যাপারে দাবী সমন্বয় বা সেট অফ করবে। উল্লেখ্য যে, বিবাদীর দাবী বাদীর চেয়ে বেশি হলে তখন সেট অফ বা দাবী সমন্বয় না হয়ে আলাদা মামলা করতে হবে। এই মামলাকে কাউন্টার ক্লেইম বলে। কাউন্টার ক্লেইম এর কথা বলা আছে।
আদেশ-২১ বিধি ১৯ মতে। যেমন- রহিম ২ লক্ষ টাকার দাবীতে করিমের বির“দ্ধে মামলা করে, করিম লিখিত জবাবে বলছে আমি রহিমের কাছে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাই। এক্ষেত্রে বিবাদীর দাবী বাদীর চেয়ে বেশি বিধায় উহা দাবী সমন্বয় বা সেট অফ হবে না বরং আলাদা মামলা করতে হবে।
দেঃ কাঃ বিধি আইনের আদেশ-৯ ঃ
আদেশ-৯(৩) ও ৯(৪)ঃ বাদী, বিবাদী কেউ উপস্থিত না হলে আদেশ ৯(৩)-এ মামলা খারিজ হবে, ইহাকে ছানী বা পুনর“দ্ধারের জন্য আবেদন করিতে হয় আদেশ ৯(৪) মতে।
আদেশ-৯(৬) ও ৯(১৩) ঃ বাদী উপস্থিত কিন্তু বিবাদী অনুপস্থিত হলে মামলায় একতরফা ডিক্রী হবে, ইহার রদ করিতে হয় আদেশ ৯(১৩) মতে। এক তরফা ডিক্রী রদ করার মেয়াদ কাল ৩০ দিন।
আদেশ-৯(৮) ও ৯(৯) ঃ বাদী অনুপস্থিত বিবাদী উপস্থিত হলে মামলা খারিজ হবে। এক্ষেত্রে মামলা পুন:বহাল করতে হলে আবেদন করিতে হবে দেঃ কাঃ বিঃ আইনের আদেশ ৯ বিধি ৯ মতে।
উল্লেখ্য যে, আরজি খারিজ ও মামলা খারিজ একই বিষয় নয়।
ধারাঃ-১০ (রেস-সাব-জুডিস- মামলা স্থগিত) –
১) একই পক্ষ,
(২) একই বিচার্য বিষয়,
(৩) একই এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে একটি মামলা হলে ঐ বিষয় নিয়ে অন্য কোন মামলা চলতে পারে না। আর যদি ঐ বিষয় নিয়ে অন্য একটি মামলা হয় তবে প্রথমটি চলবে দ্বিতীয়টি স্থগিত থাকবে।
ধারাঃ-১১ (রেস-জুডিকাটা: দোবারা দোষ) –
১) একই পক্ষ,
(২) একই বিচার্য বিষয়,
৩) একই এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে একটি মামলা চূড়ান্ত ভাবে নিষ্পত্তি হলে ঐ বিষয় নিয়ে পুনরায় মামলা চলবে না। ইহাকে রেস-জুডিকাটা বলে।
ধারা-১২ ঃ একই বিষয় নিয়ে একাধিক মামলা করা যাবে না।
ধারা-২২ঃ (বিবাদী কর্তৃক মামলা স্থানান্তর) –
যখন এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্নের ভিত্তিতে (১৬-২০ ধারা মতে) বাদী তাহার সুবিধামত আদালতে মামলা করে তখন বিবাদী কর্তৃক মামলা স্থানান্তর আবেদন ২২ ধারাতে করতে হয়।
উল্লেখ্য এই মামলাগুলো শুধু মাত্র এখতিয়ার নিয়ে সমস্যা হলে করতে হবে। নচেৎ এই ২২ ধারায় মামলা করা যাবে না।
শর্তঃ ১ম শুনানীর পর বিবাদী এই আবেদন করতে পারবে। বিচার্য বিষয় গঠনের সময় বা পূর্বে এই আবেদনটি করতে হয়।
ধারা-২৪ ঃ (মামলা স্থানান্তর)
২টি কারনে মামলা স্থানান্তর হতে পারে যথাঃ-
১) পক্ষগণের আবেদন ক্রমে;
২) আদালতের ই”ছায় বা স্ব:স্ফূর্ত ভাবে।
উল্লেখ্য এই আবেদনটি বাদী বিবাদী যে কেউ করতে পারে। মামলা স্থানান্তরের ক্ষমতা ২ টি আদালতের রয়েছে যথা-
ক) জেলা জজ ঃ (ধারা-২৩(১)- একই এখতিয়ার সম্পন্ন (আঞ্চলিক) আদালতে মামলা স্থানান্তর করতে হলে জেলা জজে আবেদন করতে হবে।
যেমনঃ ঢাকার মধ্যে এক থানা হইতে আরেক থানায় স্থানান্তর।
খ) হাইকোর্টঃ (ধারা-২৩(২)- অঞ্চল ভিন্ন হলে হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে।
যেমনঃ মুন্সিগঞ্জ হইতে যদি মামলাটি ঢাকায় স্থানান্তর করতে হয়।
আদেশ-৫ঃ সমন আদেশ-৫(১)
যখন বাদীপক্ষ মামলা দায়ের করে নেজারত বিভাগ হইতে বিবাদীপক্ষকে হাজির হওয়ার জন্য যে নোটিশ প্রদান করা হয় তাকে সমন বলে। সমনের দুটি কপি থাকবে। সমনের সাথে আরজির একটি অনুলিপি সংযুক্ত করতে হবে। সমনে বিচারক ও সেরেস্তাদারের স্বাক্ষর থাকবে। সমন গ্রহীতার স্বাক্ষর বা প্রাপ্তি স্বীকার থাকবে। একাধিক বিবাদী থাকলে প্রত্যেককে সমন দিতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজনঃ সমন নিয়ে সংশোধন হয়েছে ২০১২ সালে কিন্তু এখনও কার্যকর নহে। ঐ উভয় লিঙ্গ বুঝায় সমনের ক্ষেত্রে।
সংশোধনীঃ পূর্বের বিষয়ঃ বাড়ীর চাকর ও মহিলা সমন গ্রহণ করতে পারবে না।
সংশোধনীঃ যে বিষয় পরিবর্তন হয়েছেঃ সাবালক যে কেউ সমন গ্রহণ করিতে পারিবে। তবে মহিলা যদি মামলার পক্ষ হয় তবে সে সমন গ্রহণ করিতে পারে।
সমন জারী ঃ বাদী, বিবাদী, সাক্ষীকে ডাকার জন্য সমন জারী করতে পারে। ৩ ভাবে সমন জারী করা যায়, যথা-
১) ব্যক্তিগত ভাবে, আদেশ-৫, বিধি ৯-১৯ মোতাবেক।
২) বিকল্প পদ্ধতিতে, আদেশ-৫, বিধি-২০ মোতাবেক।
৩) ডাকযোগে, আদেশ-৫ বিধি-২১-৩০ মোতাবেক।
সমনের খরচ বহন করবে বাদী নিজে। সমন ও নোটিশ একই জিনিস নয়। সমন পাঠানো হয় প্রসেসারের মাধ্যমে নেজারত বিভাগ হইতে। নোটিশঃ দরখাস্তের মাধ্যমে যা পাঠানো হয় তাই নোটিশ।
আদেশ-৫ বিধি-২০ঃ (বিকল্প পদ্ধতির সময় জারী)
আদালত যদি মনে করে বিবাদী সমন এড়ানোর জন্য লুকিয়ে আছে; অথবা অন্য কোন কারনে বিবাদী সমন গ্রহণ করছে না; সেক্ষেত্রে আদালত নিম্নলিখিত ভাবে সমন জারী করা যাবেঃ-
বিবাদী যে গৃহে সর্বশেষ বসবাস করেছে এবং আদালতে কোন প্রকাশ্য স্থানে সমনের নকলের একটি কপি লটকাইয়া দিলে বিকল্প পদ্ধতিতে সমন জারী হয়েছে বলে গন্য হবে। বিকল্প পদ্ধতিতে সমন জারীরক্ষেত্রে আদালত যদি মনে করেন বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও সমন জারী করতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, দেঃ কাঃ বিধিতে যেকোন দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে। তবে ফৌঃ কাঃ বিধিতে যে কোন ২টি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে। নাবিক, বৈনাবিক, সৈনিকের ক্ষেত্রে তার কমান্ডিং অফিসারের কাছে সমন জারী করতে হবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এর পরিচালকের কাছে সমন প্রেরণ করতে হবে। আসামী যদি জেলে থাকে তবে জেলারের নিকট সমন প্রেরণ করতে হবে। উল্লেখ্য যে, এ/ডি করেও সমন জারী হয়। ডাকযোগে রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে যদি সমন প্রেরণ করা হয় তবে সমন জারী হোক আর না হোক ৩০ দিনের মধ্যে সমন জারী হয়েছে বলে গন্য হইবে। সকল বিবাদীদের সমন জারী করাকে গড় জারী বলা হয়।
২৭ ধারায় সমন দেওয়া হয় বিবাদীকে। ৩১ ধারায় সমন দেওয়া হয় সাক্ষীকে।
ধারা-৩০ঃ কোন বস্তু বা পদার্থ বা দলিলপত্র আদালতে হাজির করার জন্য ৩০ ধারাতে সমন প্রেরণ করা হয়। যাহার নিয়মাবলী আদেশ-১১-তে দেওয়া আছে। ৩০ ধারা অমান্য করিলে শাস্তির কথা আছে ৩২ ধারায়।
ধারাঃ ৩২ (উৎঘাটন অমান্য করার শাস্তি)
১) আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করিতে পারে;
২) মালামাল ক্রোক বা বিক্রয় করিতে পারেন;
৩) অনধিক ৫০০/- টাকা জরিমানা করিতে পারেন।
৪) জামানত প্রদানের আদেশ দিতে পারেন;
৫) জামানত না দিলে দেওয়ানী কারাগারে প্রেরন করিতে পারে; দেওয়ানী কারাগারে কাউকে আটক করিলে তাকে প্রিজন সেল বলে।
ধারা-৫৫ মতে দেওয়ানী কারাগারে কাউকে আটক করিলে তার খরচ বাদীকে বহন করিতে হইবে। জরিমানার টাকা যদি ৫০/- টাকার কম হয় তাহা অনাদায়ে ৬ সপ্তাহ বা ৪২ দিনের জেল হবে এবং ৫০/- টাকার বেশী হলে ৬ মাস বা ১৮০ দিনের জেল হবে। দেঃ কাঃ বিঃ ৫০ ধারায় বলা হয়েছে টাকার মামলায় কোন মহিলাকে গ্রেফতার করা যাবে না। দেওয়ানী মামলায় সর্বো”চ শাস্তি হলো ১৮০ দিন বা ৬ মাস।
উল্লেখ্য যে, উদঘাটনের সময় শুধুমাত্র বস্তু (দলিল) হাজির করতে বলা হয় তবে ঐ বিষয় নিয়ে হাজিরকারকের কোন সাক্ষী বা জবানবন্দি গ্রহণ করা যাবে না। যদি বলা হয় দলিল সহ সাক্ষী হাজিরের কথা তবে হাজিরকারক সাক্ষী দিতে পারিবে।
আদেশ-৯ বিধি (১৩ক) (এক তরফা ডিক্রী রদের নিয়ম)
আদালত যদি মনে করে তবে বিবাদীকে সর্বো”চ ৩ হাজার টাকা জরিমানা করে এক তরফা ডিক্রী রদ করতে পারেন। একতরফা ডিক্রী রদের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের মধ্যে দরখাস্ত দায়ের করতে হয়।
আদেশ-১০ বিধি-১ (পক্ষগণের পরীক্ষাকরণ বা জবানবন্দি গ্রহণ)
জবানবন্দি-১০ আদেশে, দলিল বা কাগজপত্র উপস্থাপন আদেশ ১০(১)
আদেশ-১২ স্বীকারোক্তির কথা বলা হয়েছে আদেশ-১২-তে।
স্বীকারোক্তির সময় দলিল প্রমাণের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে। কোন ব্যক্তি নোটিশ প্রাপ্তির পর অস্বীকার করলে তাকে উক্ত নোটিশের খরচ বহন করতে হবে। কোন পক্ষ শুনানীর জন্য ধার্য্য তারিখের অন্ততঃ ৯ দিন পূর্বে যে কোন সময় মামলার উদ্দেশ্যে নোটিশে উল্লেখিত কোন নির্দিষ্ট তথ্য বা তথ্য সমূহের স্বীকারোক্তি করার জন্য অপর পক্ষ যদি নোটিশ জারীর ৬ দিনের মধ্যে এরূপ কোন স্বীকারোক্তি অস্বীকার করে তবে মামলার ফলাফল যাই হোক না কেন আদালত বিপরীত কোন নির্দেশ না দিলে ঐ নোটিশের খরচ তাকে বহন করতে হবে। উল্লেখ্য যে, লিখিত জবাব দেওয়ার সময়কাল ৬০ দিন বা ২ মাস, কার্র্য দিবস হলে ৩০ কার্য দিবস। সরকারের বির“দ্ধে যদি নোটিশ জারী করে মামলা করা হয়, তবে জবাব দেওয়ার সময় ৩০ কার্য দিবস, আর ২ মাসের নোটিশ ব্যতিত সময় ৩ মাস।
স্বীকারোক্তি ৩ প্রকারঃ
যথা- ১) প্লিডিংস এর স্বীকারোক্তি; ২) চুক্তি দ্বারা স্বীকারোক্তি; ৩) নোটিশ দ্বারা স্বীকারোক্তি;
টেকনিকঃ মামলার নালিশের কারণ থাকলেই শুধু বিবাদী স্বীকৃত বা বিবৃতিতে বাদী ডিক্রী পেতে পারে। যে কোন পক্ষ মামলার যে কোন পর্যায়ে অপরপক্ষের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রায়ের জন্য অগ্রসর হতে পারে।
** পক্ষের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দলিলাদি চিহ্নিত করা যাবে। তবে কোন স্বীকারোক্তিই চূড়ান্ত স্বীকারোক্তি নয়।
আদেশ-১৩ (দলিলপত্র দাখিল, আটক, ফেরৎ)
১টি মামলার আরজিতে ৩ ধরনের দলিল থাকে-
১) সাক্ষ্য হিসাবে প্রদর্শিত দলিল ২) আরজির সাথে দাখিলকৃত দলিল ৩) ১৩ আদেশ অনুসারে দাখিলকৃত দলিল।
** কোন দলিল আদালতে প্রদর্শিত হইলে মামলার নম্বর ও শিরোনাম লিখতে হয়;
** দলিল দাখিলকারীর নাম, দাখিলের তারিখ এবং এরূপ তথ্যাদি উক্ত দলিলের উপর বিচারক পৃষ্ঠাংকন করবে ও স্বাক্ষর করিবেন। মূল দলিলের পরিবর্তে নকল দাখিল হলে তা নথির অংশ বলে বিবেচিত হইবে।
** যে সমস্ত দলিল সাক্ষ্য হিসেবে গৃহিত হয়নি তা দাখিলকারী ব্যক্তির নিকট ফেরৎ দিতে হবে।
** মৃত বাদীর বৈধ প্রতিনিধি স্বত্ব বিয়োগী অথবা দেউলিয়া বাদীর রিসিভার এমেন্ডমেন্ড অথবা খারিজ বাতিলের জন্য দরখাস্ত দাখিল করে বিলম্ব মার্জনার যথেষ্ট কারণ মার্জনার জন্য উপযুক্ত কারণ দর্শানো ব্যতিতই আদালত খারিজের আদেশ দিতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে যদি আদালত যথাযথ মনে করে তবে ৩,০০০/- টাকা পর্যন্ত খরচার আদেশ দিতে পারেন।
আদেশ-১৭ (টাইম পিটিশন বা মূলতবী)
১৭(১)ঃ সময়ের আবেদন করা হয়। সাধারণত: দো-তরফা শুনানীর আগ পর্যন্ত ৬ বার সময়ের আবেদন করা যায়।
তবে জরিমানা দিয়ে আরো ৩ বার সময়ের আবেদন করা যায়। জরিমানার পরিমান ২০০-১০০০/- টাকা পর্যন্ত।
উল্লেখ্য যে, ৬+৩ = ৯ বার একসাথে হবে না আলাদা আলাদা হবে।
সংজ্ঞা
ধারাঃ ২(১)ঃ বিধি বা নিয়ম সম্পর্কে বলা হয়েছে।
ধারাঃ ২(২)ঃ ডিক্রী।
ডিক্রী হচ্ছে আদালতের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃত বক্তব্য, যাহা মামলার তর্কিত বিষয় নিয়ে পক্ষদ্বয়ের চূড়ান্ত অধিকার নির্ণয় করে। ডিক্রী ২ প্রকারঃ ১) প্রাথমিক বা আংশিক, ২) চূড়ান্ত।
উল্লেখ্য যে, আরজি নাকচ বা খারিজ ও ১৪৪ ধারার প্রত্যার্পণের আদেশ ডিক্রীর সমতূল্য।
ধারা-২(৯)ঃ রায়ের কথা বলা হয়েছে।
ডিক্রী বা আদেশ দেওয়ার জন্য আদালত যে যুক্তি প্রদর্শন করে তাকে রায় বলে। ডিক্রীর ভিত্তি হলো রায়।
** রায় প্রদানের ৭ দিনের মধ্যে ডিক্রী প্রদান করতে হবে। আরজি দাখিল হইতে ডিক্রী প্রদানের আগ পর্যন্ত সবই রায়।
ধারা- ২(১৪)ঃ আদেশঃ দরখাস্তের ভিত্তিতে যে ফলাফল পাওয়া যায় তাই আদেশ। যাহা ডিক্রীর অন্তর্ভূক্ত হবে।
ধারা-২(১৮)ঃ র“লস বা নিয়মঃ ১ম তফসিলে বর্ণিত অথবা ১২২ বা ১২৫ ধারার অধীনে যে বিধানাবলী ও কারণ সমূহ উল্লেখ আছে তাকে র“লস বা নিয়ম বলে।
ধারা-২(৩)ঃ ডিক্রীদারঃ যার পক্ষে ডিক্রী মঞ্জুর হয়।
ধারা-২(১০)ঃ ডিক্রী দায়িকঃ যার বিপক্ষে ডিক্রী মঞ্জুর হয়। একে সাব্যস্ত দেনাদার বলে।
ধারা-২(১৫)ঃ উকিল,
ধারা-২(৭)ঃ সরকারী উকিল। উকিলকে কৌশুলীও বলে। সরকারী উকিলকে জি.পি ও পি.পি বলে
আদেশ-৩(৪)-এ উকিলের কথা বলা হয়েছে।
ধারা-২(৮)ঃ বিচারক। দেওয়ানী আদালতের অগ্রাধিকার ব্যক্তিকে বুঝাবে।
** জজ অর্থ কোন দেঃ আদালতে সভাপতিত্বকারী অফিসার।
** মুল এখতিয়ার সম্পন্ন প্রধান দেঃ আদালতে সভাপতিত্বকারী ব্যক্তিকে জজ বলে। আদালতের প্রধান কর্মকর্তা জজ। আদালতের মূল কর্মকর্তা সেরেস্তাদার। আদালতের বেঞ্চ কর্মকর্তা হলো প্রেসকার।
ধারা-২(১১)ঃ বৈধ প্রতিনিধি –
যখন কেউ মারা যায় তখন তার পক্ষে যে কাজ করে তাকে বৈধ প্রতিনিধি বলে। তাই কোন মামলার বাদী বা বিবাদীর কেউ মারা গেলেই কেবল বৈধ প্রতিনিধির প্রশ্ন উদ্ভব হয়। অন্যথায় নয়।
কোন পক্ষ মারা গেলে ৯০ দিনের মধ্যে বৈধ প্রতিনিধি নিয়োগের আবেদন করিতে হয়। এটি যে প্রক্রিয়ায় আবেদন করা হয় তাকে কায়-মোকাম বলে। বাদীপক্ষের কায়-মোকামের আবেদন আদেশ-২২(৩) মতে এবং বিবাদীপক্ষের কায়মোকাম করতে হয় আদেশ ২২(৪) মতে।
বাদীপক্ষ যদি সঠিক সময়ের মধ্যে কায়-মোকামের দরখাস্ত না করে তবে মামলাটি খারিজ হবে এবং বিবাদীপক্ষে সঠিক সময়ে কায়-মোকাম এর দরখাস্ত না করলে মামলা একতরফা ডিক্রী হবে।
ধারা-২(১২)ঃঅন্তবর্তীকালীন মুনাফাঃ বেআইনীভাবে দখলে থাকা ব্যক্তির সুদ সহ মুনাফাকে অন্তবর্তীকালীন মুনাফা বলে। যদি বেআইনী দখলকার ব্যক্তি যদি উক্ত সম্পত্তির কোন উন্নয়ন, পরিবর্তন সাধন করে থাকে তবে সে তাহার ক্ষতিপুরণ পাবে।
ধারা-১৪৪ঃ প্রত্যার্পণ বা পুনর“দ্ধারের কথা বলা হয়েছে। এর সাথে ধারা-২(১২) এর মিল রয়েছে।
যেক্ষেত্রে কোন ডিক্রীর পরিবর্তন বা রদ, করা হয় সেক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া ব্যক্তি আবেদন করবেন, প্রাথমিক আদালত এরূপ পুনর“দ্ধারের ব্যবস্থা করবেন, যাতে এরূপ ডিক্রী প্রদত্ত না হলে পক্ষগণ যে অবস্থায় থাকতো সেই অবস্থায় থাকবে।
আপীল, রিভিউ, রিভিশন
দেঃ মোকদ্দমায়ঃ খারিজ এবং ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল হয়। ফৌঃ মামলায়ঃ খালাস এবং দন্ড এর বির“দ্ধে আপীল হয়।
ভেতর/বাহিরে আপীল চলে। আরজির বিপরীতে ডিক্রী আর দরখাস্তের বিপরীতে আদেশ।
আদেশের বিরুদ্ধে সর্বদাই রিভিশন করতে হয়। ** ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপীল। যুগ্ম জেলা জজ যদি ৭ লক্ষ টাকার রায় দেয় তবে হাইকোর্টে আপীল করতে হয়, কারণ জেলা জজ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপীল গ্রহণ করতে পারে।
রিভিউ অর্থঃ পুন:বিবেচনা। রিভিশন অর্থঃ পুন:নিরীক্ষণ (বিচার)। রিভিউঃ যে আদালত কোন রায় বা আদেশ দেয় সেই আদালতে উক্ত রায় বা আদেশের পুন:বিচারের দরখাস্তকে রিভিউ বলে।
ধারা- ৯৬ (আপীল)
ধারা-৯৬(১) ঃ অন্য আইনে বাধা না থাকলে সকল মুল মামলার ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল চলে।
ধারা-৯৬(২)ঃ একতরফা ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল করতে হয়।
ধারা-৯৬(৩)ঃ সোলে ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল চলে না।
ধারা-৯৭ঃ প্রাথমিক ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল করা না হলে চূড়ান্ত ডিক্রীর সময় ঐ বিষয় নিয়ে আর আপীল চলে না।
আদেশ-৪১ (আপীল করার পদ্ধতি সমূহ)
আপীল করতে হয় সর্বদা মেমোরেন্ডাম বা স্মারক আকারে। আপীলে নতুন তথ্য সংযুক্ত করা যাবে না। আদেশের বির“দ্ধে আপীল চলে না। কিš‘ কোন কোন আদেশের বির“দ্ধে আপীল চলে তাহা বলা হয়েছে দেঃ কাঃ বিধির ১০৪ ধারায়। ডিক্রীজারীর আদেশ ব্যতিত গ্রেফতার বা অসামরিক কারাগারে আটকের আদেশের বির“দ্ধে ১০৪ ধারায় আপীল করা যায়। যদি দেঃ কারাগারে গ্রেফতার করা হয় তবে দেঃ কাঃ বিধিতেই আপীল করতে হবে।
ধারা-১০৭ঃ আপীল আদালতের ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে।
ধারা-১১৩ঃ রেফারেন্সঃ
আদেশ- ৪৬ (রেফারেন্স করার পদ্ধতি)
নিু আদালত যখন আইন সম্পর্কে জানার জন্য হাইকোর্টের নিকট নথী পাঠায় তখন তাকে রেফারেন্স বলে। রেফারেন্স — নজীর। যখন উ”চ আদালতের রেফারেন্স প্রয়োজন বা আইন সম্পর্কে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির অনুমতি নিয়ে এমিকাচ-কিউরী গঠনা করা হয়। গ্রীক শব্দ- এমিকাচ কিউরী (ঊসরপধং পঁৎরব) অর্থঃ আদালতের বন্ধু।
ধারা-১১৪ঃ (রিভিউ বা পুন:বিবেচনা)
একই আদালতে পুন:বিচারের আবেদনকে রিভিউ বলে। ২টি কারনে রিভিউ করা যায়, যথা-
১) নতুন তথ্য সংযুক্ত (দলিলপত্রাদি যাহা পরে পাওয়া যায়)
২) ন্যায় বিচার বিঘিœত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।
যে মামলায় আপীল করা হয়েছে সে মামলায় রিভিউ করা যায় না। যে মামলায় রিভিউ হয় তাতে আপীল চলে না।
আদেশ-৪৭ (রিভিউ করার পদ্ধতি)
হাইকোট ব্যতিত রিভিউ তামাদিকাল ৯০ দিন। হাইকোর্টে রিভিউ তামাদি কাল ২০ দিন। স্মল কজেজ কোর্ট-এ রিভিউ করার তামাদিকাল ১৫ দিন। রিভিউ শুধুমাত্র দেঃ কাঃ বিধিতেই কার্যকর। ইহা ফৌঃ কাঃ বিধিতে নাই।
ধারা-১১৫ঃ ২টি আদালতকে রিভিশনাল ক্ষমতা দেওয়া হইয়াছে, যথা-
(১) ১১৫(১)ঃ হাইকোর্টে রিভিশন করতে হয়।
(২) ১১৫(২)ঃ জেলা জজে রিভিশন করতে হয়।
সাধারন আদেশের বির“দ্ধে রিভিশন করতে হয়। রিভিশনের কোন আদেশ নাই। ২০০৩ সালে জেলা জজকে রিভিশনাল ক্ষমতা দেওয়া হইয়াছে।
আদেশ-২৩ঃ বিধি-১ ঃ মামলা প্রত্যাহার। বাদীকে এই আবেদন করিতে হয়।
আদেশ-২৩ঃ বিধি-৩ ঃ সোলে ডিক্রীর আবেদন। আইনগত ভাবে পক্ষগণের আবেদন ক্রমে আদালতে আপোষের মাধ্যমে যে ডিক্রী প্রদান করা হয় তাকে সোলে ডিক্রী বলে। ধারাঃ ৯৬(৩) সোলে ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল করা যাবে না আর আদেশ-২৩ বিধি-৩ সোলে ডিক্রীর আবেদন করতে হয়। আদালত সোলের সময় দেয় প্রথম-৭ দিন পরে-১৪ দিন পরে ২ মাস তাতে আপোষ না হলে মামলা যেখান থেকে শেষ হয়েছে সেখান হইতে চলবে।
আদেশ-২৪ বিধি-১ ঃ (টাকার মামলা)
টাকার ক্ষতিপুরনের মামলায় বিবাদী যে কোন সময় বাদীর দাবীর পরিমান অর্থ বা কিছু অংশ আদালতে জমা দিতে পারেন।
যেমন- ক, খ এর কাছে ২ লক্ষ টাকা পাবে বলে একটি মামলা করলো যাহা চলমান আছে। এমতাব¯’ায় ক, খ-এর ২ লক্ষ টাকার মধ্যে ১ লক্ষ টাকা আদালতে প্রদান করিল। এটা বিবাদী করিতে পারিবেন এবং আদালতও গ্রহণ করিতে পারিবেন।
আদেশ-২৪ বিধি-৩ঃ বিবাদীর প্রদানকৃত টাকায় বাদীর ক্ষতিপুরণ হোক আর না হোক এক্ষেত্রে আদালত কোন সুদ মঞ্জুর করিতে পারিবে না। যেমন- ক, খ এর কাছে ২ লক্ষ টাকা পাবে বলে একটি মামলা করলো যাহা চলমান আছে। এমতাব¯’ায় ক, খ-এর ২ লক্ষ টাকার মধ্যে ১ লক্ষ টাকা আদালতে প্রদান করিল। বিবাদী তাহা সুদ বিহীন গ্রহণ করিতে বাধ্য।
যদি বিবাদী, বাদীর মামলার বিচার্য বিষয় গঠন হওয়ার আগেই বাদীর সমস্ত দাবী মেনে নেয়, তবে বাদী মামলার কোন খরচ পাবে না। আর যদি বিচার্য বিষয় গঠন হয় তবে বাদী মামলার খরচ পাবে। সরকারের বির“দ্ধে মামলা হলে বা সরকার মামলা করলে সেক্ষেত্রে সরকার কোন মামলার খরচ প্রদান করিবে না এবং নিজেও কোন মামলার খরচ গ্রহণ করিবে না। টাকার মামলায় কোন মহিলাকে গ্রেফতার করা যাবে না। টাকা মামলার ক্ষেত্রে দাবীকৃত টাকার সঠিক পরিমান এবং অন্তবর্তীকালীন মুনাফার আনুমানিক পরিমান উল্লেখ করতে হবে। যেমন- যদি ১ লক্ষ টাকার মামলা হয় তবে সেক্ষেত্রে অন্তবর্তীকালীন মুনাফা সহ ১ লক্ষ বিশ হাজার টাকা দাবী করতে হবে। ১ লক্ষ মূল টাকা এবং অন্তবর্তীকালীন মুনাফা ২০ হাজার টাকা।
ধারাঃ ৫৪ এবং আদেশ-২০ বিধি ১৮ বাটোয়ারা মোকদ্দমা বা পার্টিশন স্যুট
বাটোয়ারা মোকদ্দমায় ২টি ডিক্রী হয় যথা-
১) প্রাথমিক ডিক্রী এবং ২) চূড়ান্ত ডিক্রী।
** বাটোয়ারা মোকদ্দমায় প্রাথমিক ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল না করলে ঐ বিষয় নিয়ে চূড়ান্ত ডিক্রীর বির“দ্ধে আপীল করা যাবে না।—- ধারা-৯৭। যেমন- ক ও খ এর মধ্যে ৫ শতাংশ জায়গা নিয়ে বাটোয়ারা মোকদ্দমা হয়। ক-এর দাবী ৩ শতাংশ এবং খ এর দাবী ৩ শতাংশ উভয়ে উভয়ের ২ শতাংশ স্বত্ব স্বীকার করিলো তাতে প্রাথমিক ডিক্রী হবে উভয় ২ শতাংশ করে মালিক। এখন বিরোধ ১ শতাংশ নিয়ে। তাই বলা যায় যে প্রাথমিক যে ডিক্রী দিবে আপত্তি বা আপীল করলে তাহার বির“দ্ধেই করতে হবে চূড়ান্ত ডিক্রী হলে আর আপীল চলিবে না। দরখাস্তের শেষে সর্বদাই হলফনামা দিতে হইবে। আরজির ক্ষেত্রে সর্বদাই সত্যপাঠ দিতে হইবে।
ধারা-৩৮ (ডিক্রীজারী মোকদ্দমা)
যে আদালত হইতে ডিক্রী পায় সেই আদালতেই ডিক্রীজারীর দরখাস্ত করিতে হয়।
৩ ভাবে ডিক্রীজারী করা যায়, যথা- ১) সম্পত্তি অর্পন বা হস্তান্তরের মাধ্যমে। ২) দেনাদারকে গ্রেফতার ও দেওয়ানী কারাগারে আটকের মাধ্যমে; ৩) রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে।
ধারা-৪৮ঃ ডিক্রী পাওয়ার ১২ বৎসরের মধ্যে ডিক্রী জারীর মামলা করতে হবে। ১২ বৎসর পার হলে উক্ত ডিক্রী বাতিল বলে গন্য হইবে। ধারা-৪৭ঃ ডিক্রীজারীতে কেউ বাধা দিলে ৩০ দিন বা ১ মাস দেওয়ানী কারাগারে আটক রাখা যাবে। তবে গ্রেফতার করতে হবে সূর্য উদয় ও সূর্য অস্তের মধ্যে। স্বত্ব ঘোষনা ও ঘোষণা মূলক মোকদ্দমায় ডিক্রীজারীর প্রয়োজন নাই।
** পুলিশ কাউকে দেঃ মোকদ্দমায় গ্রেফতার করলে ২টি উপায়ে ছেড়ে দিতে পারে (১) রায় বা ডিক্রীকৃত টাকা জিম্মায় নিয়ে; (২) গ্রেফতারের খরচ গ্রহণ করে;
ধারা-৮৮ঃ স্বার্থ বিহীন মামলা। আদেশ-৩৫ (ইন্টার প্লিডার)
স্বার্থ বিহীন মামলার শর্তাবলীঃ
১) মামলার বিষয়বস্তু‘ অস্থাবর সম্পত্তি হতে হবে।
২) যেখানে বাদীর কোন স্বার্থ থাকবে না।
৩) একাধিক দাবীদার হতে হবে।
৪) বাদী তার মামলার খরচ পাবে।
৫) চার্জ গঠনের পর বাদী উক্ত মামলা হইতে অব্যাহতি পাবে।
যেমন- ক একটি মোবাইল পেলো যাহাতে তার কোন স্বার্থ নাই। উক্ত বিষয় নিয়ে ক দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলো তাহাতে একাধিক দাবীর বেড় হলো ক উক্ত দাবীদারদেরকে বিবাদী করিয়া মামলা করিল। উক্ত মামলায় বাদী তাহার খরচ পেলে এবং উক্ত মামলায় চার্জ গঠনের পর আদালত বাদীকে অব্যাহতি দিয়ে মূল মালিকের নিকট অস্থাবর সম্পত্তি প্রত্যার্পন করে মামলাটি নিষ্পত্তি করিলো।
আদেশ-৩৩ বিধি-১ঃ
(নিঃসম্বল বা প্রপার স্যুট)
পরিধেয় বস্ত্র ছাড়া যার নিকট ৫০০০/- টাকার উপরে সম্পত্তি নেই তাকেই নিঃসম্বল ব্যক্তি বলে। অন্যভাবে অনুর্ধ্ব ৫০০০/- টাকা। উল্লেখ্য যে, মামলার বিষয়ব¯‘ উক্ত সম্পত্তি হইতে বাদ দিতে হবে। ** নিঃসম্বল ব্যক্তির প্রপার স্যুট এর জন্য দরখাস্ত করতে হয় আদেশ ৩৩ বিধি-৩। নিঃসম্বল ব্যক্তির শুধু মাত্র কোর্ট ফি মাফ করা যাবে আর কিছুই নয়। নিঃসম্বল ব্যক্তির দরখাস্ত নামঞ্জুর হলে আপীল করতে হবে আদেশ ৪৪, বিধি -১ মতে।
নিষেধাজ্ঞাঃ (ওহলবপঃরড়হ)
দেঃ কাঃ বিধিতে নিষেধাজ্ঞা ৩ প্রকার। যথাঃ-ক) অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা। খ) অ¯’ায়ী নিষেধাজ্ঞা। গ) ¯’ায়ী বা চির¯’ায়ী নিষেধাজ্ঞা। মামলা চলাকালে অ¯’ায়ী ও অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা চলে। াৎক্ষনিক সমস্যা সমাধানে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন হয়। যেমন- মামলা হয়েছে কিš‘ তারপরও বিবাদীগণ যদি নালিশী সম্পত্তির যে ক্ষতি করতে চায়।
অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা প্রদানের পর ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অ¯’ায়ী নিষেধাজ্ঞার শুনানী করতে হবে ও চাইতে হবে। সংজ্ঞাঃ আদালত স্বল্প সময়ের জন্য নোটিশ ব্যতিত যে নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করে তাকে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা বলে।
আদেশ-৩৯, বিধি-১ (অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা)
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার শর্ত ৩টি। যথা-
ক) মামলার ধরন দেখলেই বুঝিতে হবে যে, দরখাস্তকারী সুবিধা পাবে।
খ) সুবিধার ভারসাম্য বাদীর পক্ষে থাকতে হবে।
গ) অপূরনীয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য হলে মিছ ভালোলেশন বা আদেশ লঙ্ঘন-এর মামলা করতে হবে। যাহা আদেশ-৩৯, ২। আদেশ লঙ্ঘনের মামলা খারিজ হয় আদেশ-৩৯, বিধি-৪ মোতাবেক। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ অমান্যে ৬ মাসের কারাবাস।
আদেশ-৩৯ (২)(৩)।
আদেশ-৩৯, বিধি-৭ঃ লোকাল ইন্সপেকশন (স্থানীয় পরিদর্শন)ঃ
** মামলার বিষয়বস্তু‘ সংরক্ষণ ও তদন্ত-বিষয়ে পরিদর্শনের জন্য যে, পরিদর্শন বা আটক করার জন্য কালেক্টর পাঠানো হয়। পক্ষান্তরে;
আদেশ-২৬, বিধি-৯ঃ লোকাল ইনভেস্টিগেশন (স্থানীয় তদন্ত)ঃ
মামলার সম্পত্তি বা মূল্যমান নির“পন বা যাচায়ের জন্য স্থানীয় তদন্ত পাঠানো হয়। স্থানীয় পরিদর্শন হলো মামলার সামগ্রীক বিষয়। স্থানীয় তদন্তঃ মামলা বিষয়ের মুল্যমান। ৯০ দিন বা ৩ মাসের মধ্যে লোকাল ইনভেস্টিগেশন এর রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।
দেঃ কাঃ বিধির আদেশ-৪০, বিধি-১ঃ (এস.আর এ্যাক্ট- ৪৪ ধারা) (রিসিভার নিয়োগ) ঃ-
** মামলা চলমান অবস্থায় সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষন করার জন্য আদালত যাকে নিয়োগ করে তাকে রিসিভার বলে।
** আদালত রিসিভারের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করবে।
দেঃ কাঃ বিধির আদেশ-৩৮, বিধি-৫ঃ (রায়ের পূর্বে ক্রোক)
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার শর্ত গুলো প্রযোজ্য। ডিক্রীজারীর সময় রায়ের পূর্বে ক্রোক আবেদন করা যায়। অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলায় যে কোন সময় চাওয়া যায়। সর্বমোট ৩৬টি জিনিস ক্রোক করা যাবে না।
টেকনিকঃ ** জমি/কৃষির সাথে সম্পর্কযুক্ত কোন কিছুই রায়ের পূর্বে ক্রোক হবে না।
** পরিধেয় বস্ত্র, অত্যাবশকীয় জিনিসপত্র ক্রোক করা যাবে না। গৌরাবান্বিত বা ঐহিত্যবাহী সংরক্ষিতি বিষয়ব¯‘ও ক্রোক করা যাবে না। সর্বশেষ সংশোধনী ২০১২-তে বলা হয়েছে যে, দেঃ মোঃ করার আগে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা অ.উ. জ বা অল্টার নেটিভ ডিস্পুট রেজুলেশন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
২টি উপায়ে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায় যথা-
ক) মধস্থ’তার মাধ্যমে (ধারা-৮৯ (ক)ঃ যে কোন পর্যায়ে।
খ) সালিশ (ধারা-৮৯(খ) । সাইলেন্ড আপীলের মধ্য¯’তায় (ধারা- ৮৯(গ)।
** মামলার যে কোন পর্যায়ে সালিশের আবেদন করা যায়। মধস্থ’তার আবেদন করা হয় লিখিত জবাবের পর।
** যদি দুইপক্ষ সালিশের সম্মতি দেয় তবে ২০০১ সালের সালিশ আইন দ্বারা সালিশ পরিচালনা করা হয়।
** সালিশে সম্মতি জ্ঞাপন পত্রকে অচলনামা বলে। সালিশী সমাধানপত্রকে রোয়েদাদ বলে।
উল্লেখ্য যে, দেঃ কাঃ বিধিতে ২০০৩ সালে মধ্য¯’তা অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং ৮৯(গ) বা আপীলের ধারাটি সংযক্ত করা হয়। আপীলের মধ্য¯’তা ২০০৬ সালে করা হয়। মধ্য¯’তা শর্তে যদি কোন সিদ্ধান্ত হয় তবে এর বির“দ্ধে ৮৯(ক)-১২ ধারা মতে আপীল চলে না। আদালত প্রতিদিন ১০০ টি আংশিক ও ৫টি চূড়ান্ত শুনানী করতে পারে।
ধারা-১৫১
(আইনগত ব্যাখ্যা নেই যেখানে সেখানেই ধারা-১৫১ ব্যবহার হয়)
** ১৫১ ধারায় আদালতের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে।
** দুটি কারনে অন্তর্নিহিত ক্ষমতা প্রয়োগ করা যায়।
(ক) আদালতের পরোয়ানা অবমাননা রোধ করার জন্য। (খ) ন্যায় বিচার রক্ষার জন্য।
** ন্যায় বিচারে আদালত যে কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে। যেখানে আইনগত ব্যাখ্যা আছে সেখানে ১৫১ ধারার প্রয়োজন নাই। আইনের তথ্যগত ব্যাখ্যার জন্য ১৫১ ধারার প্রয়োজন হয়।
ধারা-২৬, আদেশ ৪ (১)
আরজির বিবরণঃ
Unbelievable Short Technique
Thanks sir
sohoje mone thakbe